ব্যাংকে কত টাকা রাখলে ট্যাক্স দিতে হয় বিস্তারিত জেনে নিন 

5/5 - (4 votes)

ব্যাংকে কত টাকা রাখলে ট্যাক্স দিতে হয় তা জানার আগ্রহ সকলেরই আছে। আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রয়োজনে দেশের প্রচলিত ব্যাংকগুলোতে টাকা জমা রাখি। তবে যে কোন ব্যাংকে টাকা জমা রাখলে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের লিমিট পার হয়ে গেলে সেই টাকার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ট্যাক্স দিতে হবে। কত টাকা ব্যাংকে জমা রাখলে ট্যাক্স দিতে হবে এবং ট্যাক্স দেয়ার কার্যপ্রণালী গুলো কি কি? ব্যাংকের গ্রাহক কিভাবে ট্যাক্স প্রদান করবে ইত্যাদি সম্পর্কে গুগলে জানতে চায়। 

তাই আজকের এই আর্টিকেলে কোন ব্যাংকে কত টাকা রাখলে ট্যাক্স দিতে হবে, ট্যাক্সের পরিমাণ কত, এই সকল বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। সুতরাং বলাই যায় আজকের এই ব্লক পোস্ট মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি আপনার ব্যাংক একাউন্ট থেকে ট্যাক্স সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারবেন। 

ব্যাংক এবং ট্যাক্সের সম্পর্ক

দেশের প্রচলিত ব্যাংক হলো আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অবিচ্ছেদ অংশ যেখানে আমরা আমাদের মূল্যবান টাকা ডিপোজি রাখি, লোন গ্রহণ করি, বিভিন্ন অর্থনৈতিক লেনদেন এবং অফার স্বামী বিবেকান ধরনের সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকি। দেশের প্রায় প্রায় প্রত্যেকটি ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের আর্থিক নিরাপত্তা এবং সকল ধরনের লেনদেনের ক্ষেত্রে নিরবিচ্ছিন্ন সার্বিক সহযোগিতা করে থাকে। তবে অবশ্যই আপনারা জানার জরুরী যে কোন ব্যাংকে কত টাকা জমা রাখলে সেখানে ট্যাক্স কার্যকর বাধ্যতামূলক হয়। আরে এ কারণেই অনেকেই প্রশ্ন করে থাকে ‘ব্যাংকে কত টাকা রাখলে ট্যাক্স দিতে হয়?’ আর এর উত্তর জানার পূর্বে অবশ্যই আমাদের জানা জরুরী ট্যাক্স কেন দিতে হয়! 

ব্যাংকে টাকা রাখলে ট্যাক্স দিতে হবে কেন?

এটি কেবল আমাদের দৈনন্দিন লাইফের একটি সহজ কৌশলের মধ্যে একটি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, যে কোন ব্যাংক আমাদের একাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেয় এবং তার পরিমাণটি সরকারি কোষাগারে জমা করে থাকে। এটি সংগ্রহের সময় সচরাচর ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে। এটি হয়তো একটি সাধারিত প্রক্রিয়া, কিন্তু তার সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন জড়িয়ে আছে, “আমি ব্যাংকে কত টাকা রাখলে ট্যাক্স দিতে হবে?”

আপনি যখন কোন ব্যাংকে টাকা জমা রাখেন বা ডিপোজিট করেন, সেই ডিপোজিট করা টাকা মূলত একটি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে জমা হয়। অ্যাকাউন্টের ধরন অনুযায়ী আপনি যে পরিমাণ অর্থ জমা করেন তার উপর নির্ভর করে, নির্দিষ্ট সময়সীমা পার হবার পর সেই অর্থের উপর সুদ পেতে পারেন।

আর এ কারণেই আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্জিত সুদের উপর আপনাকে কর দিতে হয়। কারণ সুদের আয় বেশিরভাগ কর কর্তৃপক্ষ দ্বারা করযোগ্য আয় হিসাবে বিবেচিত হয়। অনেক দেশে, সরকার সুদের আয় সহ বিভিন্ন ধরনের আয়ের উপর কর আরোপ করে, যা জনসাধারণের পরিষেবা এবং সরকারী কার্যক্রমের জন্য অর্থায়ন করে। ঠিক একই রকম ভাবে আমাদের দেশেও এই কর দিয়েও অনেক স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কিংবা সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক কার্যপ্রণালী সম্পাদন করা হয় আর এই কার্যপ্রণালীর অর্থনৈতিক যোগান আসে বিভিন্ন ধরনের কর মাধ্যম থেকেই।

আপনার ব্যাঙ্কের আমানতে সুদ উপার্জনের নির্দিষ্ট করের মাধ্যমে অর্জিত সুদের পরিমাণ, আপনার টোটাল আয় এবং আপনার এখতিয়ারের ট্যাক্স আইনের মতো বিষয়গুলির উপর নির্ভর করে পরিবর্তন এবং পরিমার্জিতহতে পারে। আমাদের দেশের মতো আপনি যে দেশের ব্যাঙ্কের সুদের সাথে সম্পর্কিত ট্যাক্স নিয়মাবলী অর্থাৎ টার্মস এন্ড কন্ডিশন সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা আবশ্যক, যাতে করের নিয়ম নীতিগুলোর সাথে সম্মতি নিশ্চিত করতে সক্ষম হন এবং আপনার ব্যাংকে জমা রাখার টাকার উপর আয়ের সঠিকভাবে করের সময় সম্পর্কে রিপোর্ট করা যায়৷ 

ট্যাক্সের ধরণ এবং সংগ্রহ

ট্যাক্সের প্রকারভেদ আছে, এবং তা নির্ধারণ করতে হলে ব্যাংকে রাখা টাকার পরিমাণ বোঝা জরুরি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, একজন ব্যক্তির ব্যাংক একাউন্টে রাখা টাকার উপর নির্ভর করে ট্যাক্সের পরিমাণ বিভিন্ন হতে পারে। আমরা এখানে বিস্তারিতভাবে এই ট্যাক্সের পরিমাণ জানব, যাতে আপনি আপনার ব্যাংকে রাখা টাকা হ্যাপি রেখে এবং আপনার ট্যাক্স সঠিকভাবে দিতে পারেন।

ব্যাংকে কত টাকা রাখলে কোন ট্যাক্স প্রদান করতে হয় না

ETIN Registration BD: Getting Started

বাংলাদেশে, একজন ব্যক্তি যদি তার ব্যাংক একাউন্টে সাধারিত এক বছরে জনপ্রতি ১০০,০০০ টাকা অথবা তার একাউন্টে জমা থাকা অর্থাৎ বিকাশ করা টাকা মোটামুটি ১০০,০০০ টাকা হলে, তার কোনো ট্যাক্স দিতে হয় না। এটি হলো সরকারের নির্ধারণ। সহজ ভাষায়, এই পরিমাণের টাকা রাখলে কোনো ট্যাক্সের চার্জ হয় না।

ব্যাংকে কত টাকা রাখলে ট্যাক্স দিতে হয়

তাছাড়া, ট্যাক্সের পরিমাণ বিভিন্ন স্তরে বিভাজিত হয়েছে ব্যাংক একাউন্টে রাখা টাকার উপরে। উল্লেখযোগ্য যে, ট্যাক্সের পরিমাণও প্রতি বছরে পরিবর্তন হতে পারে, তাই এটি প্রতি বছরে আপডেট করা হয়।

১০০,০০০ টাকা নিচে: ট্যাক্স শূন্য – এই স্তরে ১০০,০০০ টাকা নিচে রাখলে কোনো ট্যাক্স দিতে হয় না।

১০০,০০০ টাকা থেকে ৫০০,০০০ টাকা পর্যন্ত: ১৫০ টাকা – এই স্তরে ১০০,০০০ টাকা থেকে ৫০০,০০০ টাকা পর্যন্ত রাখলে আপনাকে প্রতি বছর ১৫০ টাকা ট্যাক্স দিতে হবে।

৫০০,০০০ টাকা থেকে ১০,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত: ৫০০ টাকা – ৫০০,০০০ টাকা থেকে ১০,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত রাখলে আপনাকে প্রতি বছর ৫০০ টাকা ট্যাক্স দিতে হবে।

১০,০০,০০০ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত: ৩,০০০ টাকা – ১০,০০,০০০ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত রাখলে আপনাকে প্রতি বছর ৩,০০০ টাকা ট্যাক্স দিতে হবে।

এক কোটি টাকা থেকে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত: ১৫,০০০ টাকা – এক কোটি টাকা থেকে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত রাখলে আপনাকে প্রতি বছর ১৫,০০০ টাকা ট্যাক্স দিতে হবে।

পাঁচ কোটির উপরে: ৪০,০০০ টাকা – পাঁচ কোটির উপরে থাকলে আপনাকে প্রতি বছর ৪০,০০০ টাকা ট্যাক্স দিতে হবে।

টাকার পরিমাণ ট্যাক্স পরিমাণ
১০০,০০০ টাকা নিচে ট্যাক্স শূন্য – এই স্তরে ১০০,০০০ টাকা নিচে রাখলে কোনো ট্যাক্স দিতে হয় না।
১০০,০০০ টাকা থেকে ৫০০,০০০ টাকা পর্যন্ত ১৫০ টাকা – এই স্তরে ১০০,০০০ টাকা থেকে ৫০০,০০০ টাকা পর্যন্ত রাখলে আপনাকে প্রতি বছর ১৫০ টাকা ট্যাক্স দিতে হবে।
৫০০,০০০ টাকা থেকে ১০,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত ৫০০ টাকা – ৫০০,০০০ টাকা থেকে ১০,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত রাখলে আপনাকে প্রতি বছর ৫০০ টাকা ট্যাক্স দিতে হবে।
১০,০০,০০০ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত ৩,০০০ টাকা – ১০,০০,০০০ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত রাখলে আপনাকে প্রতি বছর ৩,০০০ টাকা ট্যাক্স দিতে হবে।
এক কোটি টাকা থেকে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত ১৫,০০০ টাকা – এক কোটি টাকা থেকে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত রাখলে আপনাকে প্রতি বছর ১৫,০০০ টাকা ট্যাক্স দিতে হবে।
পাঁচ কোটির উপরে ৪০,০০০ টাকা – পাঁচ কোটির উপরে থাকলে আপনাকে প্রতি বছর ৪০,০০০ টাকা ট্যাক্স দিতে হবে।

কীভাবে ট্যাক্স দিতে হয়:

আপনি যদি আপনার ট্যাক্স পরিমাণ বের করতে চান, তবে আপনি এটি কিভাবে পরিশোধ করতে হয় তা জানতে হবে। সাধারিত পদ্ধতিতে, ব্যাংক আপনার একাউন্ট থেকে ট্যাক্স কাটা শুরু করবে এবং এটি সরকারের কোষাগারে জমা করবে। আপনি তাদের নিজস্ব ব্যবস্থা থেকে ট্যাক্স দেওয়ার জন্য অনুমোদন দিতে হবে না। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঘটে, এবং আপনি কোনো প্রয়োজনীয় কদম নেয়ার প্রয়োজন হয় না।

এক নজরে:

এই পোস্ট থেকে প্রত্যেকে বোঝার দায়িত্ব পাবে, ব্যাংকে কত টাকা রাখলে কত ট্যাক্স দিতে হবে তার লিস্ট এবং এটি একটি অধ্যায়বিশেষভাবে স্বজ্ঞানে তুলবে, যাতে প্রতিটি ব্যক্তি সঠিকভাবে তার ট্যাক্স প্রদান করতে পারে। এটি একটি সাধারিত সমস্যা এবং ব্যক্তিগত অসুবিধার সমাধানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা।

শেষে এটি প্রকাশ করা হয়েছে এবং এটি আপনার ব্যাংক একাউন্টে টাকা রাখার সঠিক উপায় এবং সঠিক পরিমাণে ট্যাক্স প্রদানের অবস্থা জানতে আপনাদের সাহায্য করবে। এটি তাদের ব্যক্তিগত অর্থনীতির বিকাশে সাহায্য করতে পারে এবং ব্যক্তিগত অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সাধনে সাহায্য করতে পারে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *