সম্প্রতি, একজন অসহায় বাবার ছেলের জীবন বাঁচাতে কয়েকটি ছবি দিয়ে আর্থিক সহায়তার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা হয়েছে। পোস্টটিতে সাহয্যের জন্য বিকাশ ও নগদ হিসেবে ‘01538418389’ এবং রকেট হিসেবে ‘01538418389-0’ নাম্বার যুক্ত করা হয়েছে।

‘তানিয়া আক্তার’ নামক ফেসবুক পেজ থেকে উক্ত দাবিতে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আর্থিক সহায়তা চেয়ে প্রচারিত ছবিগুলো কোনো ছেলের নয় বরং, তাজরীন নামের এক মেয়ের। প্রকৃতপক্ষে, ভারতের অনলাইন ক্রাউডফান্ডিং প্ল্যাটফর্ম কেট্টো (Ketto) এর মাধ্যমে ২০২০ সালে তাজরীনের জন্য আর্থিক সহায়তার আবেদনের ছবি ব্যবহার করে সম্প্রতি বর্তমানে আলোচিত দাবিতে পোস্টগুলো প্রচার করে আর্থিক সহায়তার নামে প্রতারণা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতের অনলাইন ক্রাউডফান্ডিং প্ল্যাটফর্ম কেট্টো (Ketto) এর ফেসবুক পেজে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ ‘My daughter’s eye ball is dangling out because of a horrible disease. Please help me save her life:’ শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত পোস্টটিতে দেওয়া লিংককে প্রবেশ করে ‘Tajrin’s cancer is spreading, help me save her from this deadly disease’ শীর্ষক শিরোনামে শিশুটির চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহের অনুরোধ করা এক মানবিক আবেদনেও আরও ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।
অ্যাবাউট থেকে জানা যায়, ছবিগুলো অরবিটাল র্যাবডোমায়োসারকোমা (এক ধরনের বিরল ক্যান্সার) আক্রান্ত ৫ বছর বয়সী তাজরীন নামের এক শিশুর। শিশুটিকে সুস্থ করতে জরুরি ভিত্তিতে কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি এবং অস্ত্রোপচার করতে প্রায় ২৬,৬৪৯.৭৯ মার্কিন ডলার প্রয়োজন ছিল। শিশুটির চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহের অনুরোধ করা এক মানবিক আবেদন এটি।
তবে, ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, এই তহবিল সংগ্রহ ২০২০ সালের ২৫শে মার্চ শেষ হয়েছে।

উক্ত তহবিল সংগ্রহের সর্বশেষ আপডেট তথ্যে ফাইন্ড রাইজার জসিম (মেয়ের বাবা) বলেন, আপনাদের দয়ায় আমার মেয়ে নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে। তার বয়স এখন ৫ বছর। তাজরীন এখন খুব ভালো আছে এবং খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তার কেমোথেরাপি শেষ হলেই সে স্কুলে যেতে প্রস্তুত। চিকিৎসার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তার হয়নি এবং সে আগের চেয়েও ভালো আছে। সে বাংলাদেশে তার বাড়িতে ফিরে এসেছে। আমার মেয়ে এখন ভালো খাচ্ছে এবং তার ওজন ২৪.৫ কেজি। পুনরায় কোনো সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা এড়াতে তাকে নিয়মিত ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। আপনাদের মতো দয়ালু মানুষদের সহায়তার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। আপনাদেরকে আবারও ধন্যবাদ!
সুতরাং, আর্থিক সহায়তার নামে প্রতারণার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশি মেয়ে তাজরীনের অসুস্থতার পুরোনো ছবি ব্যবহার করে একজন অসহায় বাবার ছেলের জীবন বাঁচাতে আর্থিক সহায়তার আবেদন দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।