সম্প্রতি, সামাজিক মাধ্যমে অস্ত্রে সজ্জিত একটি টেবিলের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি শেয়ার করে কিছু পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলের শিবির সভাপতির রুম থেকে সেনাবাহিনীর উদ্ধার করা অস্ত্রের দৃশ্য। অপর কিছু পোস্টে একই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, এগুলো ছাত্রদল সভাপতির রুম থেকে উদ্ধার করা অস্ত্র।

শিবির সভাপতির রুম থেকে অস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
একই দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ছাত্রদল সভাপতির রুম থেকে অস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলের ছাত্রদল বা শিবির সভাপতির রুম থেকে অস্ত্র উদ্ধারের দাবিটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, এই দাবিতে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি গত বছরের আগস্টে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী থানায় লুট হওয়া অস্ত্র সেনাবাহিনীর মাধ্যমে উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করার পুরোনো ঘটনার।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার লৌহজং প্রতিনিধি শওকত হোসেনের ফেসবুক প্রোফাইলে গত ১৮ আগস্ট প্রকাশিত একটি পোস্টে একই ভিডিও পাওয়া যায়। পোস্টের ক্যাপশন অনুযায়ী, ভিডিওটি মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী থানায় লুট হওয়া অস্ত্র সেনাবাহিনী উদ্ধার করে থানায় হস্তান্তরের দৃশ্য।

একই দিন আজকালের খবরের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর, মুন্সীগঞ্জ সদর থানা ও ট্র্যাফিক পুলিশ কার্যালয় থেকে লুট হওয়া বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। ১৮ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা সার্কিট হাউজ কক্ষে উদ্ধার হওয়া এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ সহ লুট হাওয়া বিভিন্ন সরঞ্জাম পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে সেনাবাহিনী। উদ্ধারকৃত এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ সহ বিভিন্ন সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে রাইফেল,পিস্তল,শর্টগান সহ বিভিন্ন ধরনের মোট ১৪০টি আগ্নেয়াস্ত্র,৩ হাজার ৯৩৪ রাউন্ড গোলাবারুদ। এছাড়াও উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৯ হাজার ৫০০ টাকার,নগদ অর্থ ও পুলিশের পোষাক সামগ্রী। একই দিন জেলার টঙ্গীবাড়ী থানা থেকে লুট হওয়া ৭৯টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩ হাজার ৮৯১টি গোলাবারুদ উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
একই তথ্য একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনেও (১,২,৩) উঠে এসেছে।
আমরা বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে ভিডিওটি প্রথম ফেসবুকে পোস্ট করা সাংবাদিক শওকত হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি জানান, তার দেওয়া ক্যাপশনের তথ্যটি সঠিক।
এছাড়া, গতকাল (৭ আগস্ট) সমকালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নবাব আবদুল লতিফ হলের শিবির সভাপতির কক্ষ থেকে অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া তথ্যটি গুজব বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান।
সুতরাং, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলের ছাত্রদল বা শিবির সভাপতির রুম থেকে অস্ত্র উদ্ধারের দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।