মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গত ০৬ মার্চ দুপুরে আট বছরের একটি শিশু ধর্ষণের শিকার হয় বলে সম্প্রতি অভিযোগ করে শিশুটির পরিবার। এরই প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি প্রচার করা হচ্ছে যে, শিশুটি মারা গেছে৷

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মাগুরায় ধর্ষণের শিকার হওয়া শিশুটি মারা যাওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং শিশুটি বর্তমানে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচে) চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক সমকাল পত্রিকার ওয়েবসাইটে আজ (১০ মার্চ) দুপুরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার আজ জানিয়েছেন, মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটি চোখের পাতা নেড়েছে। তার অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছে।
আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা বিষয়ক বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ শিশুটির বিষয়ে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। আজও তিনি চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন শিশুটির শারীরিক অবস্থার খুব সামান্য উন্নতি হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর প্রথমবারের মতো শিশুটি চোখের পাতা নেড়েছে। তবে শ্বাসরোধের কারণে তার মস্তিকে অক্সিজেন সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছিল। মস্তিষ্কে পানি জমে গিয়েছিল, যেটা অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। তার বুকের মধ্যে যে বাতাস জমে ছিল সেটা দূর করা গেছে। চিকিৎসকরা আশাবাদী দুই এক দিনের মধ্যে শিশুটির অবস্থার আরও উন্নতি হবে।
এদিকে আজ রাতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে জানানো হয়, প্রতিদিন স্ট্যান্ডার্ড আইসিইউ প্রটোকল অনুযায়ী শিশুটির প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং তদানুযায়ী চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। বর্তমানে শিশুটি লাইফ সাপোর্টে আছে।
এর আগে আজ সকালে জানা গিয়েছিল, শিশুটির জ্ঞান চার দিনেও ফেরেনি। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় আট সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) কর্তৃপক্ষ। সিএমএইচের চিকিৎসকরা তখন জানিয়েছিলেন, বুকে প্রচণ্ড চাপ দেওয়ায় শিশুটির ফুসফুসের বিভিন্ন জায়গায় বাতাস জমে গেছে। রোববার দুপুরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অতিরিক্ত বাতাস বের করে বুকে টিউব বসানো হয়েছে। অক্সিজেন স্বল্পতার কারণে তার মস্তিষ্কেও ক্ষতি হয়েছে।
সুতরাং, মাগুরায় সম্প্রতি ধর্ষণের শিকার আট বছরের শিশুটি মারা গেছে শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র