সম্প্রতি, বাগবাজার ঘাট নামক এলাকায় ব্যাগে করে লাশ ফেলতে এসে দুইজন নারী জনতার হাতে ধরা পড়েছেন এবং পরবর্তীতে উপস্থিত জনতা তাদেরকে পুলিশের কাছে সমর্পণ করেছেন শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ব্যাগে করে লাশ ফেলতে এসে দুই নারীর ধরা পড়ার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়। প্রকৃতপক্ষে, উক্ত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে কলকাতার কুমারটুলী ঘাট এলাকায় ট্রলিতে মৃতদেহ নিয়ে গঙ্গার ঘাটে ফেলতে আসা মা-মেয়ের আটক হওয়ার পর ধারণ করা।
দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রির্ভাস ইমেজ সার্চের মাধ্যমে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি Kuheli Gutta নামের একটি ভারতীয় এক্স অ্যাকাউন্টে প্রচারিত একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটির শিরোনামে বলা হয়, ভিডিওটি কলকাতার কুমারটুলি ঘাটে ধারণ করা হয়েছে। পুলিশ এসে ভিডিওতে দেখতে পাওয়া ব্যাগটির তালা ভাঙলে ভেতরে একজন নারীর মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও পোস্টটিতে জানানো হয়, ব্যাগটি বহণকারী দুই নারী সম্ভবত এটি গঙ্গায় ফেলতে এসেছিলেন।
পরবর্তীতে উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম Times Now News এর ওয়েবসাইটে ২৫ ফেব্রুয়ারি Dead Body In Trolley Bag: কলকাতার গঙ্গার ঘাটে হাড়হিম দৃশ্য! ট্রলির মধ্যে পচা গন্ধ, ব্যাগ খুলতেই চোখ কপালে উঠল সকলের শীর্ষক শিরোনামে একই ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার কুমারটুলী ঘাট এলাকায় ট্রলিতে করে মৃতদেহ নিয়ে গঙ্গার ঘাটে ফেলতে এলে স্থানীয়দের হাতে আটক হন দুই নারী। পরবর্তীতে উপস্থিত জনতা তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। আটক হওয়া দুই নারীর নাম আরতি ঘোষ ও ফাল্গুনী ঘোষ। তাঁরা সম্পর্কে মা-মেয়ে। ব্যাগে থাকা মরদেহটি সুমিতা ঘোষ নামেরে আরেকজন নারীর। সুমিতা ঘোষ, ফাল্গুনী ঘোষের পিসিশাশুড়ি ছিলেন।
এছাড়াও কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যমে (হিন্দুস্তান টাইমস, এবিপি নিউজ বাংলা, এই সময়) একই তথ্য সম্বলিত সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
সুতরাং, কলকাতার গঙ্গার কুমারটুলি ঘাটে দুইজন নারীকে ব্যাগে মরদেহসহ আটকের ঘটনাকে বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।