সম্প্রতি, বাংলাদেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে- শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশে কারফিউ জারির দাবিটি মিথ্যা বরং, ভারতের আসামের একটি এলাকায় কারফিউ জারির ঘটনাকে বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত পোস্টগুলোর মন্তব্যের ঘরে Time News নামক একটি নিউজ ওয়েবসাইটে “ব্রেকিং নিউজঃ হঠাৎ বাংলাদেতশে কারফিউ জারি”- শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদনটিতে বলা হয় “ভারতের আসাম রাজ্যের বাংলাদেশ সীমান্তে হঠাৎ করে রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। সীমান্ত জটিলতা নিরসনে যখন দিল্লিতে বৈঠক চলছে, তখনই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই বৈঠকে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকর্তারাও উপস্থিত রয়েছেন। ঢাকা আগেই জানিয়েছিল, এবার ভিন্ন সুরে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরবে তারা।
আসামের কাছার জেলার প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখা এবং অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান ঠেকানোর জন্যই সীমান্তে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
জেলা শাসক মৃদুল যাদব মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেন। ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ১৬৩ ধারার আওতায় এই কারফিউ কার্যকর হয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের এক কিলোমিটার এলাকার মধ্যে কোনো ব্যক্তি চলাচল করতে পারবেন না। পাশাপাশি, সীমান্ত লাগোয়া সুরমা নদীতে নৌযান চলাচল ও মাছ ধরার ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় রাতে চিনি, চাল, গম, ভোজ্যতেল ও লবণবাহী যান চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কাছার জেলার পুলিশ সুপার নোমাল মাহাট্টা জানিয়েছেন, সীমান্তে বিএসএফ জওয়ানদের সহযোগিতায় টহল জোরদার করা হয়েছে।
হঠাৎ করে এই কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণ স্পষ্ট নয়। তবে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এসব নিয়ম আগে থেকেই কার্যকর ছিল, এখন আরও কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে। সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।”
অর্থাৎ, প্রতিবেদনটিতে কোথাও বাংলাদেশে কারফিউ জারির কথা উল্লেখ করা হয়নি।
এছাড়া, ভারতের মূলধারার গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।
পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশে কারফিউ জারি হওয়া সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, গতকাল (২৬ ফেব্রুয়ারি) ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর এলাকায় শ্রীশ্রী রশিক রায় জিউ মন্দিরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা থেকে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১২ টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জের মধ্যনগর বাজারে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
সুতরাং, বাংলাদেশে কারফিউ জারি হওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।