গত ১২ ফেব্রুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক হিসাবে শপথ নেন তুলসী গ্যাবার্ড। বাংলাদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পর বিভিন্ন সময় হওয়া হামলার ঘটনা নিয়ে কথা বলায় তিনি আগে থেকেই বেশ আলোচিত। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক হামলার বিষয় নিয়ে তুলসী গ্যাবার্ড কথা বলছেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।
ভিডিওটিতে তাকে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নামাজের মুহূর্তে হিন্দুদের র্কীতন অনুষ্ঠান চালু রাখার কারণে ইসকন মন্দিরে হামলার ঘটনার পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের উপর বিভিন্ন দেশে চালানো হামলার বিষয় নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিওতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে কথা বলেননি। প্রকৃতপক্ষে, ২০১৬ সালে ইসকনের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে তুলসি গ্যাবার্ডের দেওয়ার বক্তব্যের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেসের (ইসকন) অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেল ISKCON News এ ২০১৬ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওর ৩ মিনিট ২৫ সেকেন্ড সময়ে তুলসী গ্যাবার্ডের দেওয়া বক্তব্যের সাথে আলোচিত দাবিতে ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে।

ভিডিওটির শিরোনাম এবং বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, ইসকনের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে সে বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্টের ওয়াশিংটন ডিসিতে গালা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে প্রধান বক্তা হিসেবে হাওয়াই থেকে নির্বাচিত তৎকালীন মার্কিন কংগ্রেসওম্যান তুলসী গ্যাবার্ড বক্তব্য রাখেন। উক্ত ভিডিওটি তার বক্তব্য প্রদানের সময় ধারণ করা।
ভিডিওতে তুলসী গ্যাবার্ডকে বলতে শোনা যায় ‘দুই সপ্তাহ আগের একটি কথা শুনে আমার খারাপ লেগেছে যে মুসলিমদের নামাজের সময় জড়ো হওয়ার কারণে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি ইসকন মন্দিরে আক্রমণ করা হয়েছিল। জুন মাসে আইএস বাংলাদেশে একজন হিন্দু পুরোহিত, আশ্রমের কর্মী এবং একজন খ্রিষ্টান গ্রোসাকের হত্যার দাবি করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে হিন্দু ছাড়াও খ্রিষ্টান, মধ্যপন্থী মুসলিম, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী, মানবতাবাদী এবং অন্যান্য ধর্মের সংখ্যালঘুরা পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, কাশ্মীর এবং ভুটানে হামলার শিকার এবং নিহত হয়েছে। তাই আমাদের প্রশ্ন এমন সহিংসতা ও পাগলামোর কারণ কী……..’ (বাংলায় অনূদিত)
সেসময় ইসকন এর অফিশিয়াল নিউজ ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।।
সুতরাং, ২০১৬ সালে হাওয়াই-এর কংগ্রেসওম্যান থাকাকালীন ইসকনের ৫০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্য প্রদানের ভিডিওকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে দেওয়া তার বক্তব্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।