সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বেড়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, লালমনিরহাট ও মহেশপুর সীমান্তে বিএসএফের বেড়া নির্মাণের উদ্যোগের ফলে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে ‘ভারতের মালদহ সুকদেবপুর সীমান্তে কিছু বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ করে রাতের আঁধারে কৃষিজমির ফসল নষ্ট করেছে’ দাবিতে একটি ভিডিও ভারতীয় গণমাধ্যম রিপাবলিক বাংলা বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করেছে।
এই দাবিতে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
এক্সে প্রবারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি বাংলাদেশি নাগরিকদের দ্বারা ভারতীয় কৃষিজমির ফসল নষ্ট করার নয়। প্রকৃতপক্ষে, এটি বাংলাদেশের মেহেরপুরে কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় হতাশাগ্রস্ত কৃষকদের নিজ জমির ফুলকপি নষ্ট করার দৃশ্য।
দাবিকৃত ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধানে, মাছরাঙা টেলিভিশনের ফেসবুক পেজে গত ১ জানুয়ারি ‘দাম না পেয়ে ক্ষেতেই ফুলকপি নষ্ট করছেন মেহেরপুরের কৃষকরা’ ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি পোস্টে মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।
ভিডিও বিশ্লেষণে দেখা যায়, মেহেরপুরের কৃষকরা কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় ক্ষোভে নিজেদের জমির ফুলকপি নষ্ট করছেন। ভিডিওতে উপস্থিত কৃষকদের সাক্ষাৎকারেও তারা জানান, ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার হতাশা থেকেই ফসল নষ্ট করেছেন তারা।
নাগরিক টিভির ফেসবুক পেজে গত ২ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদনে আলোচিত ভিডিওটির বিস্তারিত তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ভিডিওটি মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলায় ধারণ করা হয়েছে। সেখানে প্রতি পিস ফুলকপি মাত্র ১ টাকায় বিক্রি হওয়ায় ন্যায্য মূল্য না পেয়ে হতাশ কৃষকরা প্রতিবাদস্বরূপ নিজেদের জমির ফুলকপি নিজেরাই নষ্ট করতে বাধ্য হন।
এছাড়া, মেহেরপুরে কৃষকদের ফুলকপি নষ্ট করার ঘটনাটি নিয়ে দেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও একই তথ্য উঠে এসেছে।
সুতরাং, মেহেরপুরে কৃষকদের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় নিজেদের ফুলকপি নষ্ট করার ভিডিওকে ভারতের সীমান্তে বাংলাদেশিরা অনুপ্রবেশ করে ভারতীয় কৃষকদের ফসল নষ্ট করেছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।