সম্প্রতি নরসিংদীতে বিএনপি নেতাদের চাঁদাবাজির ঘটনায় গণমাধ্যমের সংবাদ দাবিতে তিনটি গণমাধ্যম (ফেস দ্যা পিপল, মানজমিন ও মানবকণ্ঠ)-এর লোগো সম্বলিত তিনটি ফটোকার্ড সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।
ফেস দ্যা পিপলের লোগো সম্বলিত ফটোকার্ডে দাবি করা হয়েছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মইন খানের ব্যক্তিগত সহকারী বাহাউদ্দিন মিল্টনের চাঁদাবাজিতে নরসিংদীর পলাশের ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, প্রধান শিক্ষকসহ সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। বিএনপি নেতা আলম মোল্লা, মহিউদ্দিন চিশতী, ছাত্রদল নেতা পাপন ও আরিফ তার চাঁদাবাজির প্রধান হাতিয়ার
মানজমিনের লোগো সম্বলিত ফটোকার্ডে দাবি করা হয়েছে, নরসিংদীর পলাশ ও ঘোড়াশালে বিএনপি নেতারা প্রতিদিন পরিবহন খাত থেকে লাখ টাকার চাঁদাবাজি করছে, অথচ প্রশাসন নীরব।
মানবকণ্ঠের লোগো সম্বলিত ফটোকার্ডে দাবি করা হয়েছে, বিএনপি নেতা মহিউদ্দিন চিশতী ও সাবেক ছাত্রনেতা রতন পরিবহন থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, নরসিংদীতে বিএনপি নেতাদের চাঁদাবাজির দাবিতে আলোচিত সংবাদ বা ফটোকার্ডগুলো সংশ্লিষ্ট তিনট গণমাধ্যম (ফেস দ্যা পিপল, মানজমিন ও মানবকণ্ঠ) প্রকাশ করেনি। বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে গণমাধ্যমগুলোর লোগো ব্যবহার করে নকল ফটোকার্ড তৈরি করা হয়েছে।
ফেস দ্যা পিপলের লোগো সম্বলিত ফটোকার্ডে যাচাই
আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে ফেস দ্যা পিপলের লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফেস দ্যা পিপলের লোগো ও ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখের সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, ফেস দ্যা পিপলের ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এছাড়াও, আলোচিত ফটোকার্ডটিতে ব্যবহৃত ফন্ট ও গঠনের সাথে ফেস দ্যা পিপলের প্রচলিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্ট ও গঠনের ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়।

মানজমিনের লোগো সম্বলিত ফটোকার্ডে যাচাই
আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে মানজমিনের লোগো লোগো থাকলেও এতে প্রকাশের কোনো তারিখের উল্লেখ নেই।
মানজমিনের লোগোর সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, মানজমিনের ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এছাড়াও, আলোচিত ফটোকার্ডটিতে ব্যবহৃত ফন্ট ও গঠনের সাথে মানজমিনের প্রচলিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্ট ও গঠনের ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়।

মানবকণ্ঠের লোগো সম্বলিত ফটোকার্ডে যাচাই
আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে মানবকণ্ঠের লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ০৩ মার্চ, ২০২৫ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
মানবকণ্ঠের লোগো ও ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখের সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, মানবকণ্ঠের ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এছাড়াও, আলোচিত ফটোকার্ডটিতে ব্যবহৃত ফন্ট ও গঠনের সাথে মানবকণ্ঠের প্রচলিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্ট ও গঠনের ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়।

সুতরাং, নরসিংদীতে বিএনপি নেতাদের চাঁদাবাজির ঘটনায় গণমাধ্যমের সংবাদ দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট।