বাংলাদেশের আর্থিক লেনদেন প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে ট্রাস্ট ব্যাংক অন্যতম। ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে এ সম্পর্কে অনেকেই google এ প্রশ্ন করে থাকেন।
ট্রাস্ট ব্যাংক কি? ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট কি? ট্রাস্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কত প্রকার? ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম, ট্রাস্ট ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট খোলার নিয়ম, ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলার শর্ত, ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে, ট্রাস্ট ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট এর সুবিধা, ট্রাস্ট ব্যাংক হেল্পলাইন Trust Bank Helpline সহ ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট সম্পর্কে সকল ধরনের প্রশ্নের উত্তর আজকের এই আর্টিকেলে পেয়ে যাবেন। চলুন কথা না বাড়িয়ে ট্রাস্ট ব্যাংক সম্পর্কে স্টেপ বাই স্টেপ জেনে নেই।
ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড | |
ধরন | পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি |
---|---|
শিল্প | ব্যাংকিং, আর্থিক পরিসেবা |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯৯৯ |
সদরদপ্তর | ৩৬, দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা, বাংলাদেশ |
প্রধান ব্যক্তি | বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান (পদাধিকারবলে) |
পণ্যসমূহ | ফাইন্যান্স ও বীমা কনসুমার ব্যাঙ্কিং যৌথ ব্যাঙ্কিং ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কিং বিনিয়োগ ব্যবস্থাপন |
নীট আয় | ২৬৪.৬ কোটি (US$ ৩৮.৩৫ মিলিয়ন) ২০০৮ |
ওয়েবসাইট | https://www.tblbd.com/ |
ট্রাস্ট ব্যাংক কি?
ট্রাস্ট ব্যাংক মূলত একটি বেসরকারি অর্থনৈতিক লেনদেন প্রতিষ্ঠান যা সেনা কল্যাণ ট্রাস্ট কর্তৃক পরিচালিত। দেশে প্রচলিত অন্যান্য ব্যাংকের মতোই ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড গ্রাহকরা তাদের সেভিংস ও কারেন্ট একাউন্ট খুলতে পারেন।
বর্তমান সময়ে তথ্য প্রযুক্তির উন্নতির সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র। সময়ের সাথে সবকিছু হয়েছে আধুনিক। আর দ্রুতগতি অপার সম্ভাবনার এক নাম আমাদের দেশ বাংলাদেশ। অর্থনৈতিকভাবে দ্রুত বর্ধনশীল এই দেশের জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে ১৯৯৯ সালে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মুস্তাফিজুর রহমানের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আর্মি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের উদ্যোগে দেশের ব্যাংকিং সেবায় প্রতিষ্ঠিত হয় একটি নাম “ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড।
ব্যাংকিং কার্যক্রমে বিশ্বস্ততার সাথে ট্রাস্ট ব্যাংক ২৩ বছর পার করে ২৪ তম বছরে পদার্পণ করেছে। ট্রাস্ট ব্যাংকের সফলতার পিছনে রয়েছে দক্ষ পরিচালনা পর্ষদ। তাঁদের নিরন্তর প্রচেষ্টা ব্যাঙ্কের জন্য এনে দিয়েছে অজস্র সাফল্য। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান পদাধিকারবলে ট্রাস্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন জেনারেল আজিজ আহমেদ। আর এই পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির।
নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট খোলার নিয়ম ও সুবিধা অসুবিধা জেনে নিন (100% Working)
ট্রাস্ট ব্যাংক কিভাবে কাজ করে
ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড সব সময়, সবখানে, সবার জন্য সমানভাবে সার্ভিস প্রদান করে। বর্তমানে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যে ট্রাস্ট ব্যাংক অন্যতম। সারা দেশব্যাপী ১১২ টি শাখা, ২২৯ টি নিজস্ব এটিএম বুথ, ২০ হাজারটি ক্যাশ পেমেন্ট পয়েন্ট, ৯ টি লবি, আটটি ক্যাশ ডিপোজিট মেশিন এবং ২০ হাজার ক্যাশ এজেন্ট পয়েন্টের মাধ্যমে ট্রাস্ট ব্যাংক গ্রাহকদের সেবা প্রদান করছে।
২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ট্রাস্ট ব্যাংকের মোট আমানতের পরিমাণ ২৪,৩০০ কোটি টাকার বেশি এবং লোনের পরিমাণ ২০,২০০ থেকে ১৪,০০,০০,০০০ টাকারও বেশি। দেশে বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনের প্রতিকৃতি ট্রাস্ট ব্যাংক ৭.২৩ কোটি টাকার ঋণ প্রদান করার ফলশ্রুতিতে প্রায় ২৯০০ টি পরিবার গৃহস্থালী কাজে জ্বালানী হিসেবে কাঠ বা কেরোসিনের পরিবর্তে বায়োগ্যাস ব্যবহার করছে।
এছাড়াও ট্রাস্ট ব্যাংক প্রায় ৪১৯৭ সোলার প্যানেল স্থাপনের প্রায় ১২,০০,০০,০০০ টাকা ঋণ প্রদান করেছে। ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড ARS-Bangladesh এর সহায়তায় ঝিনাইদহ জেলার আলিপাড়া গ্রামকে সোলার ভিলেজ হিসেবে গড়ে তুলেছে। সেখানকার প্রায় ১০০ টি পরিবার সোলার হোম সিস্টেম দ্বারা বৈদ্যুতিক সেবা গ্রহণ করছে। অ্যাকশন ইন ডেভেলপমেন্ট নামের একটি এনজিওর সাথে ট্রান্সপ্লান্ট চারটি সোলার ইরিগেশন পাম্প স্থাপন করার জন্য ২,০০,০০,০০০ টাকা ঋণ প্রদান করেছে।
ট্রাস্ট ব্যাংক কে তার কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ ব্যাংক বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টর থেকে পরিবেশবান্ধব ব্যাংকিং এর টেকনিক্যাল অ্যাডভাইসারি কমিটির একমাত্র সদস্য হিসেবে মনোনয়ন করেছে।
পাশাপাশি ট্রেড সার্ভিসেস ডিভিশন রেমিট্যান্স অর্জনে ধারাবাহিকভাবে সাফল্য অর্জন করে আসছে। ৩১ অক্টোবর ২০১৯ সাল পর্যন্ত মোট রেমিটেন্স আসে প্রায় ৪১২,০০,০০,০০০ টাকা। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পাশাপাশি দেশের সকল শ্রেনির জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে ট্রাস্ট ব্যাংক সবসময় সবখানেই দেশের জনগণের জন্য নিবেদিত।
ট্রাস্ট ব্যাংক পার্সোনালি আমার কাছে খুব ভালো লাগে। এই ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের কে অত্যন্ত সম্মান করে এবং তাদের যে যেকোনো রিকোয়ারমেন্ট অত্যন্ত দ্রুততার সাথে সমাধান করে।
ট্রাস্ট ব্যাংক লেনদেন কি সুদ মুক্ত?
ইসলামি শরিয়ত ভিত্তিক সুদ মুক্ত ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ট্রাস্ট ব্যাংক বর্তমানে ইসলামি ব্যাংকিং কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ১৫ টির বেশি উইন্ডো শাখার মাধ্যমে ট্রাস্ট ইসলামী ব্যাংকের ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত মোট আমানতের পরিমাণ ছিল ২৯০০ থেকে ৬৪,০০,০০,০০০ কোটি এবং নীড় বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ২০৫,০০,০০,০০০ কোটি টাকা।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার নিয়ম 2024
২০১৮-১৯ অর্থবছরে ট্রাস্ট ব্যাংক ৩৫৪ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৩৫৯,০০,০০,০০০ টাকার কৃষি ঋণ বিতরণ করতে সক্ষম হয়েছে।
ট্রাস্ট ব্যাংক লোনের প্রকারভেদ
এছাড়াও সমাজের সকল শ্রেণির বিভিন্ন আয়ের মানুষের জন্য রিটেইল ব্যাংকিং এনেছে নানা ধরনের লোন সুবিধা। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:
- কার লোন;
- হোম লোন;
- পার্সোনাল লোন;
- স্টুডেন্ট লোন;
- বাণিজ্যিক লোন;
- ডিফেন্স লোন;
ট্রাস্ট ব্যাংক এসএমই লোন প্রকারভেদ
ট্রাস্ট ব্যাংকের এসএমই লোন বিতরণ প্রকল্পগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- ট্রাস্ট সুফলা;
- ট্রাস্ট মূলধন;
- ট্রাস্ট প্রান্তিক
- ট্রাস্ট নবীন (নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য);
- ট্রাস্ট নন্দিনী (নারীদের জন্য);
- স্কুল ব্যাংকিং।
ট্রাস্ট ব্যাংক এসএমই লোন সেবার পাশাপাশি নারীদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে ৫০০ জন নারী উদ্যোক্তাকে প্রায় ১৯৩,০০,০০,০০০ টাকা ঋণ প্রদান করেছে।
এছাড়াও বিভিন্ন রিটেল ব্যাঙ্কিং সেভিংস স্কিম সহ পাশাপাশি ডিফেন্স পারসোনের জন্য আছে বিশেষ লোন সুবিধা। স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটির ছাত্রছাত্রীদের সঞ্চয়ে উৎসাহিত করার জন্য স্কুল ব্যাংকিং, বিরাট ভূমিকা রাখছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজারেরও বেশি ছাত্র ছাত্রীরা স্কুল ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করছে।
ট্রাস্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কত প্রকার?
অনেকেই জানতে চায় যে ট্রাস্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কত প্রকার? সাধারণত ট্রাস্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ৩ (তিন) প্রকার।
- সেভিংস একাউন্ট;
- কারেন্ট একাউন্ট;
- স্টুডেন্ট একাউন্ট।
সেভিংস একাউন্ট: সাধারণত মানুষ ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে প্রতিমাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা রেখে তা থেকে ইন্টারেস্ট গ্রহণের জন্য সেভিংস একাউন্ট তৈরি করে থাকেন। কিন্তু সেভিংস একাউন্ট এর ব্যালেন্স থেকে মুনাফা পেতে হলে সেভিংস অ্যাকাউন্টের নির্ধারিত সময়ের পূর্বে তা থেকে টাকা উত্তোলন করা যায় না। তবে দেশের প্রচলিত বিভিন্ন ব্যাংকের রিকোয়ারমেন্ট বিভিন্ন রকম হতে পার।
কারেন্ট একাউন্ট: মূলত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ট্রাস্ট ব্যাংকের কারেন্ট একাউন্ট খোলা হয়ে থাকে। এতে করে ব্যবসায়ী মালিকগণ কারেন্ট একাউন্ট থেকে নিয়মিত আনলিমিটেড অর্থ লেনদেন করতে পারে। কারেন্ট একাউন্টের গ্রাহকরা দৈনন্দিন যতবার ইচ্ছা ততবার টাকা উত্তোলন জমা ও লেনদেন করার অধিকার পায়।
স্টুডেন্ট একাউন্ট: কেবলমাত্র শিক্ষার্থীদের জন্য ট্রাস্ট ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট ব্যবহারযোগ্য। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন অর্থনৈতিক লেনদেনের প্রয়োজনে ব্যাংকিং সেবা পাওয়ার জন্য ট্রাস্ট ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলে থাকেন। সবচেয়ে সুবিধা জনক ব্যাপার হল ট্রাস্ট ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট দ্বারা শিক্ষার্থীরা সর্বনিম্ন ১০০ টাকাও লেনদেন করতে পারে।
ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
এবার আমরা জানবো সহজে ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে। গ্রাহককে প্রয়োজনীয় তথ্য এবং ডকুমেন্টসহ ট্রাস্ট ব্যাংকের যেকোনো শাখায় গিয়ে একাউন্টের ধরণ অনুযায়ী আবেদন ফরম পূরণ করে অ্যাকাউন্ট ওপেনিং চার্জ সহ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিবে। এরপর আবেদনকারী গ্রাহকের আবেদন করা সকল তথ্য এবং ডকুমেন্টস ট্রাস্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যাচাই বাছাই করার মাধ্যমে কাঙ্খিত ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলা যায়।
ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম ধাপে ধাপে বর্ণনা করা হলো:
একাউন্টের ধরন নির্বাচন: সর্বপ্রথম একাউন্টের ধরন নির্বাচন করতে হবে। কারেন্ট একাউন্ট নাকি সেভিংস একাউন্ট খুলবেন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সহ নিকটস্থ বা স্হানীয় ট্রাস্ট ব্যাংকে শাখায় যেতে হবে।
আবেদন ফরম পূরণ: ট্রাস্ট ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে একটি অ্যাকাউন্ট আবেদন ফরম নিতে হবে। এবার আবেদনকারীর ডকুমেন্টগুলোর তথ্য অনুযায়ী নির্ভুলভাবে উক্ত আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। তবে গ্রাহক চাইলে ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট আবেদন ফরম অনলাইন থেকে ডাউনলোড পূরণ করতে পারবে।
ডকুমেন্টস সহ আবেদন জমাদান: অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য গ্রাহকের স্বাক্ষর সহ পূরণ করা আবেদন ফরম ও অন্যান্য ডকুমেন্টস সম্বলিত তথ্য সংযুক্ত করে উক্ত ব্যাংকে জমা দিতে হবে।
একাউন্ট ওপেনিং ফি: প্রাথমিক পর্যায়ে নগদ এসবি হলে ২০০০ (দুই) হাজার এবং নগদ সিডি হলে ৫০০০ (পাঁচ) হাজার টাকা অ্যাকাউন্ট ওপেনিং ফি জমা দিতে হবে।
ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম অনুযায়ী সকল ক্রাইটেরিয়া সম্পন্ন হলে একাউন্ট ওপেনিং ফি ব্যাংক থেকে এক সপ্তাহ সময়ের মধ্যেই চাইবে। পরবর্তীতে উক্ত ব্যাংকের শাখায় অথবা ট্রাস্ট ব্যাংক হেল্পলাইন এ যোগাযোগ করে একাউন্ট একটিভ হয়েছে কিনা তা কনফার্ম হতে হবে।
ট্রাস্ট ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট খোলার নিয়ম
বর্তমান দেশের প্রচলিত বেশিরভাগ ব্যাংকেই মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রয়েছে। ঠিক একই ভাবে সর্বসাধারণের জন্য লেনদেন ব্যবস্থা সহজতর করার লক্ষ্যে ট্রাস্ট ব্যাংকের আছে নিজস্ব মোবাইল ব্যাংকিং সেবা টি ক্যাশ। এছাড়াও অনলাইন ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে গ্রাহকগণ খুব সহজে ফান্ড ট্রান্সফার লেনদেনের তথ্য, ব্যালেন্স চেক, ইউটিলিটি বিল প্রদান করতে পারে।
আপনি চাইলে ট্রাস্ট ব্যাংকের মোবাইল এপ্লিকেশন “Trust Money” অ্যাপস ডাউনলোড করে ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম জেনে একাউন্ট খুলতে পারবেন।
- প্রথমে google play store থেকে “Trust Money” অ্যাপস ডাউনলোড করুন;
- এরপর অ্যাপসটি ওপেন করে রেজিস্টার বাটনে ক্লিক করে একটি ইমেইল এড্রেস এবং মোবাইল নাম্বার দিন।
- এবার আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের উভয় দিকের ছবি দিন।
- সবশেষে আপনার সেলফি তুলে ফেস ভেরিফাই করে নিন।
ব্যাস! খুব সহজেই ট্রাস্ট ব্যাংকের মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ট্রাস্ট মানি (Trust Money) অ্যাপস দ্বারা আপনার একটি ব্যাংক একাউন্ট খোলা হয়ে গেল।
বিঃ দ্রঃ ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম অনুযায়ী Trust Money একাউন্ট খোলা সম্পন্ন হলে আপনার ব্যাংক একাউন্ট যুক্ত করে যেকোন ধরণের লেনদেন করতে পারবেন।
ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলার শর্ত
ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় বিশেষ কোনো শর্ত নেই। তবে ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম অনুযায়ী সাধারণ কিছু শর্ত রয়েছে যা নিম্নে তুলে ধরা হলো:
- নাগরিকত্ব বাংলাদেশী হতে হবে।
- আবেদন কারীর বয়স ১৮ হওয়া আবশ্যক থাকলেও বর্তমান সময়ে ১৮ বছরের কম নাগরিকরাও একাউন্ট খুলতে পারবেন।
- স্টুডেন্ট একাউন্ট এর জন্য অবশ্যই স্টুডেন্ট আইডি প্রয়োজন হবে।
ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে
অন্যান্য ব্যাংকের মতো ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খুলতেও আবেদনকারীর প্রায় একই রকম ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে। সাধারণত ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে এ বিষয়ে প্রশ্ন করার আগে যেকোনো ধরনের ব্যাংক একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে যা যা প্রয়োজন তা সম্পর্কে অবশ্যই আপনার জানা আছে।
সাধারণত আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি, ২ কপি ছবি, নমিনির জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি ও ১ কপি ছবি, এবং ইউটিলিটি বিলের কপি লাগে, বিশেষ ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান সার্টিফিকে, এবং লোনের পরিমাণ যদি অনেক বেশি হয়ে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে জামানত হিসেবে জমির দলিল ইত্যাদি ইত্যাদি।
তবে ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্টের ধরণ অনুযায়ী একাউন্ট আবেদনের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন ডকুমেন্টস প্রয়োজন হতে পারে। ট্রাস্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে যা যা লাগে তা নিচে তুলে ধরা হলো:
ব্যবসায়ীদের জন্য
- জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ১টি;
- ট্যাক্স সার্টিফিকেট এর কপি;
- KYC ফরম পূরণ;
- আবেদনকারীর দুই কপি সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি;
- ইউটিলিটি বিলের (পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট) যেকোনো একটির কপি। যদি এগুলো না থাকে তাহলে চেয়ারম্যান সার্টিফিকেটের কপি;
- নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি (জাতীয় পরিচয় পত্র না হয়ে থাকলে সে ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধনের কপি);
- নমিনির এক কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবি;
- প্রাথমিক একাউন্ট ফি জমা প্রদান;
চাকরিজীবীদের জন্য
- চাকরিরত কোম্পানির আইডি কার্ডের ফটোকপি;
- কয়েকটি নমুনা স্বাক্ষর সহ জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি;
- নমিনীর ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি;
- নমিনীর আইডি কার্ডের ফটোকপি (আইডি কার্ড না থাকলে জন্ম নিবন্ধনের কপি);
- এবং শেষ মাসিক বেতনের পে-স্লিপ এর কপি।
শিক্ষার্থীদের জন্য
- জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধনের কপি;
- স্কুল বা কলেজের স্টুডেন্ট আইডি কার্ডের কপি;
- সদ্য তোলা (২) দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম অনুযায়ী উপরে উল্লেখিত পদ্ধতি অবলম্বন করা ছাড়াও গ্রাহক চাইলে ট্রাস্ট ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের এই (https://www.tblbd.com/forms-download) লিংক থেকে আবেদনকারীর একাউন্টের ধরন অনুযায়ী আবেদন ফরম ডাউনলোড এবং সেখানে সঠিক এবং নির্ভুল তথ্য দিয়ে পূরণ করে ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলার আবেদন করতে পারবেন।
ট্রাস্ট ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট এর সুবিধা
ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট গুলোর যতগুলো প্রকারভেদ রয়েছে তার মধ্যে সেভিংস একাউন্ট এর সুবিধা গুলো অনেক বেশি। আর এই কারণেই যখন কেউ ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম অনুযায়ী অ্যাকাউন্টের জন্য আবেদন করে তখন, তারা চায় ট্রাস্ট ব্যাংকের সেভিংস একাউন্ট খুলতে। সর্বস্তরের মানুষের কাছে ট্রাস্ট ব্যাংক সেভিংস অ্যাকাউন্টের চাহিদা অনেক বেশি। ট্রাস্ট ব্যাংকের সেভিংস একাউন্ট এর সুবিধাগুলো যথাক্রমে;
- সার্ভিস চার্জ তুলনামূলক অনেক কম;
- যেকোন শাখায় ব্যাংকিং করার সুযোগ;
- MICR চেক বুক প্রদান;
- এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করার সুবিধা;
- সহজেই ভিসা ডেবিট কার্ড সুবিধা পাওয়া যায়;
- বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবস্থা;
- লেনদেনের সকল স্থিতি এসএমএস অ্যালার্ট ের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়;
- এবং মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থা।
ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম অনুসারে সেভিংস একাউন্ট খুলে উপরোক্ত সকল সুবিধাগুলো পাবেন।
ট্রাস্ট ব্যাংক হেল্পলাইন Trust Bank Helpline
ট্রাস্ট ব্যাংক হেল্পলাইন Trust Bank Helpline | |
Head Office | Shadhinata Tower, Bir Srestha Shaheed Jahangir Gate Dhaka Cantonment, Dhaka-1206. |
Tel: | +88-02-44870060-9 +88-02-44870006 |
Fax: | +88-02-44870051 |
Call Center No : | 16201 |
SWIFT Address: | TTBLBDDH |
Email : | info@tblbd.com |
iBanking Queries: | ibanking@tblbd.com |
Trust Money Queries: | apps.support@tblbd.com |
Card Related Queries: | cards@tblbd.com |
Share Department : | share.dept@tblbd.com |
Website | www.tblbd.com |
শেষকথা
আজকের এই আর্টিকেলে ট্রাস্ট ব্যাংক কি? ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট কি? ট্রাস্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কত প্রকার? ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম, ট্রাস্ট ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট খোলার নিয়ম, ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলার শর্ত, ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে, ট্রাস্ট ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট এর সুবিধা, ট্রাস্ট ব্যাংক হেল্পলাইন Trust Bank Helpline সহ ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট সম্পর্কে সকল ধরনের প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
আশা করছি ট্রাস্ট ব্যাংক সম্পর্কে আপনার সকল ধরনের কনফিউশন এবং সকল ধরনের প্রশ্নের উত্তর এই আর্টিকেলে পেয়ে গেছেন। এরপরেও যেকোনো ধরনের ব্যাংক এবং যেকোনো ধরনের তথ্য সম্পর্কে আরও প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট সেকশনে আপনার প্রশ্ন জানাতে পারেন আমি আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য চেষ্টা করব। সকলে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
FAQ’s
প্রশ্ন: ব্যাংকে না গিয়ে ট্রাস্ট ব্যাংক অনলাইন একাউন্ট খোলা যায়?
উত্তর: না। ট্রাস্ট ব্যাংকে যেকোনো ধরনের একাউন্ট খুলতে নিকটস্থ যে কোন শাখায় গিয়ে একাউন্ট খুলতে হবে।
প্রশ্ন: ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে?
উত্তর: ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খুলতে সাধারণত আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি, ২ কপি ছবি, নমিনির জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি ও ১ কপি ছবি, এবং ইউটিলিটি বিলের কপি, ঠিকানা প্রমাণে চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট লাগে।