ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম 2024 | ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট সুবিধা এবং অসুবিধা

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম 2024
5/5 - (15 votes)

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম, ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট কত প্রকার, কারেন্ট একাউন্ট, সেভিংস অ্যাকাউন্ট, স্টুডেন্ট একাউন্ট এবং সুবিধা অসুবিধা, সম্পর্কে জানুন ও ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলুন।

ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় এবং বিশ্বস্ত বেসরকারী বাণিজ্যিক ব্যাংক। অর্থনৈতিক লেনদেন এবং বেসরকারি বানিজ্যিক খাতে ইসলামী ব্যাংকের প্রতি সর্বস্তরের জনগণের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই ব্যাংকের উপর সকল নাগরিকের আগ্রহ, বিশ্বাস ও ভালোবাসা থাকলেও ইসলামী ব্যাংকের একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেরই জানা নেই।

তাই আজকের এই আর্টিকেলে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম, ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট কত প্রকার, ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট এর সুবিধা অসুবিধা সহ বিভিন্ন ধরনের স্কিম সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

আপনি যদি ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং ইসলামী ব্যাংক সম্পর্কে সকল প্রশ্নের উত্তর পেতে চান তাহলে অবশ্যই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। আশা করছি সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়লে ইসলামী ব্যাংক সম্পর্কে আপনার সকল ধরনের প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। তাহলে চলুন প্রথমেই জেনে নেই ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট কি?

সূচিপত্র

ইসলামী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কি?

ইসলামী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট” এমন একটি ব্যাংকিং ব্যবস্থা যা ইসলামিক ফাইন্যান্সের নীতিগুলি মেনে চলে, এবং ইসলামিক আইন (শরিয়া) ভিত্তিক পরিচালিত হয়। ইসলামী অর্থে, সুদ (রিবা) ধার্য করা বা পরিশোধ করা দুটোই নিষিদ্ধ, এবং ইসলামিক ব্যাংকের লেনদেন শরিয়া ভিত্তিক নীতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়।

ইসলামী ব্যাংক সম্পূর্ণ ইসলামী ধর্মীয় নিয়ম নীতি ঠিক লেখে বিভিন্ন ধরনের অ্যাকাউন্ট অফার করে। বর্তমানে ইসলামি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের একটি সাধারণ ধরন হচ্ছে “মুদারাবাহ” অ্যাকাউন্ট। এই মুদারাবাহ ব্যবস্থায়, ব্যাংক এবং অ্যাকাউন্টধারী বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের স্কিম অনুযায়ী নির্ধারিত মুনাফা লেনদেন চুক্তিতে স্বাক্ষরিত হয়।

ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মূলধন প্রদান করে, এবং অ্যাকাউন্টধারী তার দক্ষতা এবং শ্রম প্রদান করে। লেনদেনের বিনিয়োগ হতে লাভের একটি অংশ প্রাক-সম্মত অনুপাতের উপর ভিত্তি করে ইসলামী ব্যাংক এবং তাদের গ্রাহকদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়, তবে যদি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক ক্ষতির সাধন হয় তবে, তা সম্পূর্ণ ইসলামী ব্যাংক বহন করবে।

সকলের উদ্দেশ্যে জানিয়ে রাখি, ইসলামি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের আরেকটি ধরন হল “ওয়াকালাহ” অ্যাকাউন্ট। অ্যাকাউন্টধারীগন ওয়াকালাহ ব্যবস্থায় ইসলামী ব্যাংকে তাদের অর্থ জমা রাখে এবং সেই অর্থ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে বিনিয়োগ করার অনুমতি দেয়।

পরিবর্তে, ইসলামী ব্যাংক তার সার্ভিস গুলোর জন্য একটি নির্ধারিত ফি চার্জ করে এবং গ্রাহকের জমা দেয়ার টাকায় বিনিয়োগ করার যেকোনো ধরনের প্রজেক্টে অর্থনৈতিক লাভ হলে অ্যাকাউন্টধারকের কাছে তা শতকরা হারে ফেরত দেওয়া হয়।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে ইসলামী ব্যাংকের নীতি গুলো শোষণমূলক কার্যকলাপ এড়িয়ে নৈতিক এবং সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল পদ্ধতিতে আর্থিক লেনদেনগুলো পরিচালিত হয়। ইসলামী ব্যাংক অ্যাকাউন্টের প্রকারভেদ এবং শর্তাবলী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্যতার কারণে পরিবর্তিত এবং পরিমার্জিত হতে পারে। তাই নিজের আর্টিকেলে ইসলামী ব্যাংক একাউন্টের প্রকারভেদ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট কত প্রকার ও কি কি?

অনেকেই প্রশ্ন করেন ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট কত প্রকার ও কি কি? ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট কত প্রকার ও কি কি তার সম্পর্কে নিচে বর্ণনা করা হলো:

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট এর প্রকারভেদ: সাধারণত ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট গুলো তিনটি স্তরে ভাগ করা হয়েছে। আর সেগুলো হলো:

  1. কারেন্ট একাউন্ট।
  2. সেভিং অ্যাকাউন্ট।
  3. স্টুডেন্ট একাউন্ট।

আপনারা যারা ইসলামী ব্যাংক কত প্রকার সে সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন আশা করি আপনি আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন যে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট মূলত ৩ (তিন প্রকার)।

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট সুবিধা

ইসলামী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট গুলো ইসলামের শরিয়া নীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা এবং সার্ভিস প্রদান করে। ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট সুবিধা গুলো নিচে বর্ণনা করা হলো:

সুদ ছাড়া লেনদেন (রিবা): ইসলামী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সুদের অর্থ প্রদান বা সুদ গ্রহণের সাথে জড়িত নয়। আমরা সকলেই জানি ইসলাম ধর্মে সুদকে হারাম করা হয়েছে। আর যেহেতু ইসলামী ব্যাংক” ইসলামী নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হয় তাই সুদ ছাড়া ইসলামী ব্যাংকের লেনদেন হয়।

লাভ এবং ক্ষতি ভাগাভাগি: ইসলামী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট মুদারাবাহ অ্যাকাউন্টের দ্বারা ব্যাংক এবং ব্যাংকের গ্রাহকের মধ্যে লাভ এবং ক্ষতি ভাগাভাগির ভিত্তিতে কাজ করে। গ্রাহকের তহবিল বিনিয়োগ থেকে উৎপন্ন লাভ পূর্ব-নির্ধারিত অনুপাতের উপর ভিত্তি করে ব্যাংক এবং অ্যাকাউন্টধারীর মধ্যে ভাগ করা হয়।

ওয়াকালাহ (এজেন্সি): ইসলামী ব্যাংক অ্যাকাউন্টে, ব্যাংক তহবিল বিনিয়োগের জন্য ব্যাংকের গ্রাহকগণ এজেন্ট (ওয়াকিল) হিসাবে কাজ করে। ইসলামী ব্যাংক তার সার্ভিস গুলোর জন্য একটি নির্ধারিত ফি নেয় এবং গ্রাহকের বিনিয়োগ করা অর্থ থেকে যে লাভ হয় তা অ্যাকাউন্টধারকের কাছে ফেরত দেওয়া হয়।

হালাল বিনিয়োগ: ইসলামী ব্যাংক শরিয়া-সম্মত উদ্যোগে গ্রাহকের বিভিন্ন ডিপজিটের অর্থ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করে, এবং ইসলামের নীতি অনুসারে নৈতিকতার সাথে গ্রহণযোগ্য কার্যকলাপে বিনিয়োগ করা অর্থ ব্যবহার করা হয়।

ইসলামী ব্যাংক ডেবিট কার্ড: অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের ইসলামী ব্যাংক ডেবিট কার্ড দিয়ে থাকে যা শরিয়া ভিত্তিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা মেনে চলে। এই ডেবিট কার্ডগুলো সুদের সাথে জড়িত ছাড়াই লেনদেনের জন্য ব্যবহার করা হয়।

অনলাইন ব্যাঙ্কিং: ইসলামী ব্যাংক” অনলাইন ব্যাংকিং সুবিধা প্রদান করে, যা গ্রাহকরা তাদের অ্যাকাউন্ট দ্বারা দেশের যে কোন প্রান্ত হতে যেকোনো সময় যেকোনো মুহূর্তে অর্থনৈতিক লেনদেন করতে পারে।

দাতব্য অবদান (যাকাত): ইসলামী ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের জাকাত সংগ্রহ ও বিতরণের সুবিধা দেয়, যা মুসলমানদের জন্য প্রয়োজনীয় এক প্রকার দাতব্য। এর ফলে ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকরা তাদের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে দাতব্য (যাকাত) কাজে অবদান রাখতে পারেন।

শরিয়া তত্ত্বাবধান: ইসলামী ব্যাংকে সাধারণত শরিয়া বোর্ড, ইমাম বা নেতা থাকে যারা নিশ্চিত করে যে ব্যাংকের কার্যক্রম এবং আর্থিক লেনদেনগুলো ইসলামী রীতিনীতি মেনে চলে।

ঝামেলা-মুক্ত অ্যাকাউন্ট খোলা: ইসলামী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা সাধারণত খুবই সহজ এবং শরিয়া নির্দেশিকা গুলোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে আর্থিক লেনদেন বা যেকোনো ধরনের সার্ভিস প্রদানের উপর ফোকাস করে অনলাইন এবং অফলাইনে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলা যায়।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: ইসলামী ব্যাংকের সাথে প্রচলিত অন্যান্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে বৈশিষ্ট্য এবং সুবিধা সমূহ বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তন, পরিবর্ধন এবং পরিমার্জিত হতে পারে৷ তাই ইসলামী ব্যাংক সহ যেকোনো ধরনের ব্যাংকে একাউন্ট খোলার পূর্বে অবশ্যই উক্ত ব্যাংকের সকল নিয়ম-নীতি সম্পর্কে আপ টু ডেট জ্ঞান থাকা গুরুত্বপূর্ণ৷ আজ তাই আমাদের এই ব্লগের একদম শেষের দিকে ইমেইল সাবস্ক্রিপশন করে রাখুন যাতে করে ইসলামী ব্যাংক সহজে কোন ধরনের ব্যাংকের সকল ধরনের পরিবর্তন সম্পর্কে আমি আপনাকে অবহিত করতে পারি৷

ইসলামী ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট সুবিধা

ইসলামী ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট সুবিধা
ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম

আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যারা স্টুডেন্ট, যদি কোন স্টুডেন্ট ইসলামী ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলতে চায় তাহলে,ইসলামী ব্যাংক কর্তৃক ওই স্টুডেন্ট প্রয়োজনীয় কিছু সুযোগ সুবিধা পাবেন। ইসলামী ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট সুবিধা গুলো নিচে তুলে ধরা হলো:

  • ইসলামী ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট খুললে স্টুডেন্টদের এটিএম চার্জ দিতে হবে না। অর্থাৎ এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলার ক্ষেত্রে স্টুডেন্টদেরকে বাৎসরিক কোন চার্জ দিতে হবে না।
  • ইন্টারনেট ব্যাংকিং একাউন্ট তৈরি অর্থাৎ ইসলামী ব্যাংক অনলাইনে একাউন্ট চালু করার সুবিধা পাবেন। অনলাইনে শুধুমাত্র ব্যাংকিং চার্জ হিসেবে ১০০ টাকা দিয়ে ইসলামী ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট তৈরি করা যাবে।
  • স্টুডেন্ট একাউন্ট দিয়ে যে কোন শাখায় টাকা লেনদেন এবং ট্রান্সফারের সুবিধা পাবেন।
  • সর্বোচ্চ স্বল্পমূল্যে ইসলামী ব্যাংকের স্টুডেন্ট একাউন্ট তৈরী করার অগ্রাধিকার পাবেন।

ইসলামী ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত সুযোগ সুবিধা ছাড়াও আরো অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।

ইসলামী ব্যাংক স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্ট তৈরি করার নিয়ম

ইসলামী ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট তৈরি করতে যে সকল নথিপত্র বা ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হয় সেগুলো সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।

  • আবেদনকারীর স্টুডেন্ট কার্ড, এনআইডি কার্ড, জন্ম নিবন্ধন বা পাসপোর্টের ফটো কপি।
  • আবেদনকারীর পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি।
  • আবেদনকারী শিক্ষার্থী ও অভিভাবক উভয়ের সদ্য তোলা ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ডিজিটাল রঙ্গিন ছবি।
  • নমিনির ১ কপি ছবি।
  • নমিনির জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি।
  • অধ্যায়নরত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত প্রত্যয়ন পত্র কিংবা সর্বশেষ বেতন এর রিসিট বা একটি স্লিপ।
  • আবেদনকারী শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট।
  • কমপক্ষে ১০০ টাকা প্রাথমিক ডিপোজিট।

যদি কোন স্টুডেন্ট ইসলামী ব্যাংকের স্টুডেন্ট শাখায় একাউন্ট খুলতে চায়  তাহলে উপরে দেয়া উল্লেখিত ডকুমেন্ট বা তথ্যসম্বলিত নথিপত্র সহকারে ইসলামী ব্যাংকের যে কোন শাখায় উপস্থিত হলে ব্যাংকের ম্যানেজার কিংবা একজন কর্মকর্তা একাউন্ট তৈরি করার ফর্ম দিবেন।

এরপর ব্যাংকের টার্মস এন্ড কন্ডিশন পড়ে নিয়ে ইসলামী ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট আবেদন ফর্ম যথাযথভাবে ফিলাপ করে নিতে হবে। আবেদনের কয়েক কর্ম দিবসের মধ্যে ইসলামী ব্যাংক স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের যোগ্য হয়ে যাবে। অ্যাকাউন্ট সচল হয়ে যাওয়ার পর স্টুডেন্ট চাইলে তার উক্ত একাউন্টের মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যক্রম কিংবা লেনদেন করতে পারবেন।

আশা করছি উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকের স্টুডেন্ট একাউন্ট তৈরি, স্টুডেন্ট একাউন্ট এর সুবিধা সমূহ, এবং লেনদেন কার্যপ্রণালী সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন।

যেকোনো ব্যক্তি তার অলস টাকা ফেলে না রেখে প্রচলিত যে কোন ব্যাংকে একাউন্ট খুলে সেখানে আমানত হিসেবে ডিপোজিট করে রাখে এবং ডিপোজিট এর নির্দিষ্ট সময় পরিপূর্ণ হয়ে গেলে সেখান থেকে শতকরা ৯% মুনাফা পেয়ে থাকে। ডাবল বেনিফিট স্কিম একই রকম ডিপোজিট হলেও এখানে ব্যক্তির লাভের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি হয়ে থাকে। ব্যাংকে ডিপোজিট করা অর্থ নির্দিষ্ট সময় পার হবার পর লাভের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়।

ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট সুবিধা

উল্লেখ্য যে, ইসলামী ব্যাংকের মুদারাবা সঞ্চয়ী হিসাব সর্বস্তরের নাগরিকদের কাছে অধিক জনপ্রিয় একটি একাউন্ট প্যাকেজ। মূলত ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট একটি শরীয়াহ্ ভিত্তিক সঞ্চয়ী হিসাব নামে পরিচিত।

আমরা আর্টিকেলের পূর্বে আলোচনা করেছি যে, ইসলামে সুদ গ্রহণ করা এবং সুদ প্রদান করা দুটোই হারাম আর সেই বিষয়টি লক্ষ্য রেখে এই ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট অর্থাৎ মুদারাবা সঞ্চয়ী হিসাব সকলের জন্যই সেরা।

আমরা ইতিপূর্বে এও আলোচনা করেছি যে ইসলামী ব্যাংক কোন প্রকার সুদ প্রদান করে না বরং ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের গ্রাহকদের বিনিয়োগ করা অর্থ থেকে লাভ হিসেবে মুনাফা বন্টন করে। ব্যাংকের তহবিল হতে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করা গ্রাহকের অর্থ থেকে মুনাফা বেশি হলে গ্রাহক বেশি মুনাফা পাবে এবং যদি কম মুনাফা হয় তাহলে গ্রাহক কম মুনাফা পাবে।

ইসলামী ব্যাংকের সেভিংস একাউন্ট এর গ্রাহকরা উপরোক্ত টার্মস এন্ড কন্ডিশন অনুযায়ী বছরে দুইবার সাময়িক হারে লাভ পাবেন, যা ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বার্ষিক চূড়ান্ত লাভ অথবা লোকসান হিসাবের ভিত্তিতে সমন্বয় করে থাকে। এছাড়াও ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট সুবিধা গুলো নেচে তুলে ধরা হলো:

  • ফ্রি ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা।
  • ট্রানজেকশন এ্যালার্ট এর সুবিধা।
  • 24/7 কল সেন্টার সার্ভিস।
  • এমআইসিআর চেক বুক ব্যবহারের সুবিধা।
  • সেলফিন অ্যাপ ব্যবহার করে অনলাইন ব্যাংকিং এর সুবিধা।
  • গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী সেভিংস একাউন্টের বিবরণী নেয়ার সুবিধা।
  • গ্রাহকের একাউন্ট সম্পর্কে যেকোনো ধরনের অভিযোগ লিখিত আকারে প্রদান করার অগ্রাধিকার এ সুবিধা
  • ভিসা যুক্ত একটি ভার্চুয়াল ডেবিট কার্ড সুবিধা (এই ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে দেশি বিদেশি যেকোন ই-কমার্স ওয়েবসাইটে পেমেন্ট করার সুবিধা পাবেন)

বিশেষ দ্রষ্টব্য: ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে লিখিত কোন অভিযোগ না পেলে চলমান হিসাবের স্থিতি সঠিক আছে বলে ধরে নেয়া।

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট অসুবিধা

যেকোনো ব্যাংকের কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা থাকে। ঠিক একইভাবে ইসলামী ব্যাংক একাউন্টের কিছু অসুবিধা রয়েছে যা আর্টিকেলের এই সেকশনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট এর অসুবিধা গুলো নিচে বর্ণনা করা হলো:

অ্যাকাউন্ট মেনটেনেন্স চার্জ: অ্যাকাউন্ট মেনটেনেন্স ফি হচ্ছে, ইসলামী ব্যাংক একাউন্টে আপনি যে পরিমাণ অর্থ জমা রাখবেন তার উপরে ভিত্তি করে বছরে দুইবার নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা একাউন্টের রক্ষণাবেক্ষণ অর্থাৎ একাউন্ট মেন্টেনেন্স চার্জ করে থাকে। মূলত ইসলামী ব্যাংকের এই নির্দিষ্ট ফি কেই অ্যাকাউন্ট মেনটেনেন্স চার্জ বলা হয়।

মূলত জুন মাসের শেষে এবং ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে বছরে দুইবার গ্রাহকের ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট মেনটেনেন্স করার জন্য নির্ধারিত চার্জ বা ফি প্রদান করতে হয়। আর এই নির্ধারিত চার্জ বা ফ্রি গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স থেকে অটোমেটিক কেটে নেয়। এক নজরে দেখে নিন ইসলামী ব্যাংক কোন একাউন্টে কত চার্জ নেয়: 

  • গ্রাহকের একাউন্টে যদি ১০ হাজার টাকার নিচে থাকে তাহলে ইসলামী ব্যাংক কোন ধরনের চার্জ নেয় না।
  • গ্রাহকের একাউন্টে যদি ১০ হাজার ১ (এক) টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যাল থাকে তাহলে ১১৫ (একশত পনেরো) টাকা করে বছরের দুইবার চার্জ কেটে নেওয়া হবে। অর্থাৎ ১১৫x২=২৩০ অর্থাৎ (দুইশত ত্রিশ) টাকা চার্জ কেটে নেয়।
  • গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে যদি ২৫ হাজার ১ (এক) টাকা থেকে শুরু করে ২,০০,০০০ (দুই লক্ষ) টাকা ব্যালেন্স থাকে তাহলে প্রতিবছরে দুইবার বিভিন্ন চার্জ হিসেবে গ্রাহকের মূল ব্যালেন্স থেকে ব্যাংক ২৩০ (দুইশত ত্রিশ) টাকা করে চার্জ নেয়। অর্থাৎ প্রতিবছরে ২৩০x২=৪৬০ (চারশত ষাট) টাকা চার্জ কেটে নেয়।
  • গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে যদি ২ লক্ষ ১ (এক) টাকা থেকে শুরু করে ১০,০০,০০০ (১০ লক্ষ) টাকা ব্যালেন্স থাকে তাহলে প্রতিবছরে দুইবার বিভিন্ন চার্জ হিসেবে গ্রাহকের মূল ব্যালেন্স থেকে ব্যাংক ২৮৭ (দুইশত সাতাশি) টাকা করে চার্জ নেয়। অর্থাৎ প্রতিবছরে ২৮৭x ২=৫৭৪ (পাঁচশত চুয়াত্তর) টাকা চার্জ কেটে নেয়।
  • গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে যদি ১০,০০,০০০ (১০ লক্ষ) টাকার উপরে ব্যালেন্স থাকে তাহলে প্রতিবছরে দুইবার বিভিন্ন চার্জ হিসেবে গ্রাহকের মূল ব্যালেন্স থেকে ব্যাংক ৩৪৫ (তিনশত পাঁচচল্লিশ) টাকা করে চার্জ নেয়। অর্থাৎ প্রতিবছরে ৩৪৫x ২=৬৯০ (ছয়শত নব্বই) টাকা চার্জ কেটে নেয়।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: চলতি বছরের শুরুর দিক থেকে অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত যদি গ্রাহকের একাউন্টে উল্লেখিত নির্ধারিত ব্যালেন্স থাকে তাহলে প্রথম ছয় মাসের চার্জ কর্তন করা হয়। এবং জুন মাস থেকে বছরের শেষ দিকে অর্থাৎ ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত যদি উল্লেখিত ব্যালেন্স গ্রাহকের একাউন্টে থাকে তাহলে পরবর্তী ছয় মাসের নির্ধারিত চার্জ রাখা হয়।

এসএমএস অ্যালার্ট চার্জ: যখন কোন গ্রাহক যেকোনো ব্যাংক একাউন্ট এর মাধ্যমে লেনদেন করেন একটু খেয়াল করলেই দেখবেন, একাউন্ট খোলার সময় যে মোবাইল নম্বর দিয়েছিলেন সেখানে নোটিফিকেশন আসে, আর এই পদ্ধতিকেই মূলত এসএমএস এলার্ট বলা হয়। 

  • ইসলামী ব্যাংক একাউন্টের গ্রাহক যখন কোন ধরনের লেনদেন করবেন তখন একাউন্টের পরিস্থিতি এবং সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ উক্ত লেনদেনের নোটিফিকেশন গ্রাহকের নির্ধারিত মোবাইল নাম্বারে এসএমএস পাঠাবে। গ্রাহক সেই এসএমএস এর মাধ্যমে তার সকল ধরনের ট্রানজেকশন হিস্ট্রি জানতে পারবেন। এই এসএমএস অ্যালার্ট এর জন্য ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের গ্রাহকের কাছ থেকে বছরে ১৫০ টাকা + ১৫% ভ্যাট চার্জ করা হবে। আর এই এসএমএস এলার্ট চার্জ এর পরিমাণ টাকা সেটি গ্রাহকের মূল অ্যাকাউন্ট থেকে ইসলামী ব্যাংক অটোমেটিক কেটে নেবে।

আবগারি শুল্ক চার্জ: এটি মূলত সরকারি চার্জ। প্রতিবছর ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে ইসলামী ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের একাউন্ট থেকে আবগারি শুল্ক চার্জ গ্রহণ করে। তবে গ্রাহকের ইসলামী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স যদি নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম না করে তবেই কেবলমাত্র এই আবগারি শুল্ক চার্জ দিতে হয়। এক নজরে দেখে নিন কাদের জন্য আবগারি শুল্ক চার্জ প্রযোজ্য:

  • বছরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত গ্রাহকের একাউন্টে যদি ১ (এক) লক্ষ টাকার নিচে থাকে তাহলে তাকে আবগারি শুল্ক চার্জ দিতে হবে না।
  • গ্রাহকের একাউন্টে যদি ১ (এক) লক্ষ ১ (এক) টাকা থেকে শুরু করে যদি ৫,০০,০০০ (পাঁচ লক্ষ) টাকা ব্যালেন্স থাকে তাহলে প্রতিবছর ১৫০ টাকা আবগারি শুল্ক চার্জ দিতে হবে।
  • গ্রাহকের একাউন্টে যদি ৫,০০,০০০ (পাঁচ লক্ষ) টাকা থেকে ১০,০০,০০০ (১০ লক্ষ) টাকা ব্যালেন্স থাকে তাহলে, আবগারি শুল্ক বাবদ ৫,০০ (পাঁচশত) টাকা চার্জ কেটে নেওয়া হবে।
  • গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে যদি ১০,০০,০০০ (১০ লক্ষ) টাকা থেকে শুরু করে ১ (এক) কোটি টাকা ব্যালেন্স থাকে তাহলে ৩,০০০ (তিন) হাজার টাকা আবগারি শুল্ক চার্জ কেটে নেয়া হবে।
  • গ্রাহকের একাউন্টে যদি ১ (এক) কোটি টাকা থেকে শুরু করে ৫ (পাঁচ) কোটি টাকা ব্যালেন্স থাকে তাহলে ১৫,০০০ (পনেরো) হাজার টাকা আবগারি শুল্ক চার্জ কেটে নেয়া হবে।
  • গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে যদি ৫ (পাঁচ) কোটি টাকার অধিক ব্যালেন্স থাকে তাহলে আবগারি শুল্ক বাবদ ৫০,০০০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা চার্জ কেটে নেয়া হবে

বিশেষ দ্রষ্টব্য: আবগারি শুল্ক চার্জ বছরে কেবলমাত্র একবার দিতে হয়। আমি আবারও বলছি আবগারি শুল্ক এটি সরকারি চার্জ। যদি আপনার একাউন্টের টাকার পরিমান উপরোক্ত নির্দিষ্ট সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় তবেই কেবলমাত্র আপনাকে আবগারি শুল্ক চার্জ দিতে হবে।

ইসলামী ব্যাংকের কি কি ধরণের একাউন্ট রয়েছে।

ইসলামী ব্যাংকের কি কি ধরণের একাউন্ট রয়েছে।
ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকিং শাখা গুলোর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক অন্যতম আর্থিক লেনদেন প্রতিষ্ঠান। ইসলামী ব্যাংক (পি এল সি) গ্রাহকদের অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে। আরে কারণে অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ইসলামী ব্যাংকের চাহিদা জনগণের মধ্যে বেশি দেখা যায়।

সবচেয়ে বড় কথা হল ইসলামী ব্যাংকে কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়াই অ্যাকাউন্ট তৈরি করা সম্ভব হয়। আর তাই প্রতিনিয়ত মানুষ অনলাইনে ইসলামী ব্যাংক সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করে থাকেন। এছাড়াও আরো অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন যে, ইসলামী ব্যাংকের কি কি ধরণের একাউন্ট রয়েছে?

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট গুলো আরো চারটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। নিচে দেয়া আর্টিকেলের বুলেট পয়েন্টে সেগুলো পর্যায়ে কমে তুলে ধরা হলো:

  • ইসলামী ব্যাংক কারেন্ট একাউন্ট।
  • সেভিংস একাউন্ট।
  • মাসিক সঞ্চয় স্কিম একাউন্ট।
  • ফিক্স ডিপোজিট একাউন্ট।

আর্টিকেলের এই অংশে ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন ধরনের অ্যাকাউন্টের প্রয়োজনীয় লিংক দেয়া হলো যাতে করে আপনারা ইসলামী ব্যাংকের সকল ধরনের অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে অবহিত হতে পারেন এবং সকল ধরনের অ্যাকাউন্টে কিভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে হয় সে সম্পর্কে জানতে পারেন।

ইসলামী ব্যাংক কারেন্ট একাউন্ট সমূহ

সেভিংস একাউন্ট

মাসিক সঞ্চয় স্কিম একাউন্ট

ফিক্স ডিপোজিট একাউন্ট

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম 2024
ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম

আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা গুগলে সার্চ করেছেন “ইসলামী ব্যাংকের একাউন্ট খোলার নিয়ম” কি কি? তাই আর্টিকেলের এই অংশে আমি আপনাদেরকে স্টেপ-বাই-স্টেপ ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার নিয়ম খুব সহজেই দেখিয়ে দেবো। সাধারণত ইসলামী ব্যাংকের যেকোনো শাখায় গিয়ে খুব সহজে এবং দ্রুত ৩ ধরণের একাউন্ট খুলতে পারবেন। 

তবে জেনে রাখা ভালো যে, ইসলামী ব্যাংকের যেকোনো শাখায় গিয়ে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি একাউন্টের প্রকারভেদ জেনে একাউন্ট খোলার জন্য ব্যাংক কর্মকর্তা (ম্যানেজার) এর সাথে কথা বলতে হবে। এবং আলোচনা শেষে ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ একাউন্টের ধরণ অনুযায়ী আপনাকে একটি আবেদন ফরম দিবেন। 

ব্যাংকের আবেদন ফরমে উল্লেখিত টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন অনুসরণ করে আবেদন ফরমটি পূরণ করতে হবে। আপনি চাইলে পূর্ব অভিজ্ঞতার জন্য ইসলামী ব্যাংক আবেদন ফরম ডাউনলোড করে দেখে নিতে পারেন এবং চাইলে এই ফর্ম ফিলাপ করেও জমা দিতে পারবেন। তাহলে চলুন দেখে নেই কিভাবে ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট তৈরি করতে হয়:

বর্তমানে খুব সহজেই (২) দুইভাবে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলা যায়। যথা:

  • ইসলামী ব্যাংকের স্থানীয় শাখা বা এজেন্ট অফিসে উপস্থিত হয়ে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলা যায়।
  • অনলাইনে সেলফিন অ্যাপের মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলা যায়।

ইসলামী ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি

ইসলামী ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি: যদি কেউ ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করতে চায় তাহলে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট প্রকারভেদ জেনে একাউন্টের ধরন নির্বাচন করতে হবে। এরপর ব্যাংক রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী প্রয়োজনীয় নথিপত্র বা ডকুমেন্টস সহ ইসলামী ব্যাংকের যেকোন শাখা বা এজেন্ট ব্যাংকিং সার্ভিস অফিসে উপস্থিত হতে হবে।

উক্ত ব্যাংক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা গ্রাহকের আবেদন ফরম ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস অথবা কাগজপত্র যাচাই করে ভেরিফাই করবে এবং গ্রাহকের স্বাক্ষর এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট গ্রহণ করবে।

আবেদনকারীর সকল তথ্য ও ডকুমেন্টস নির্ভুল এবং সঠিক থাকলে একাউন্টের ধারণ অনুযায়ী নির্দিষ্ট টাকার প্রাথমিক ডিপোজিট সম্পন্ন করে তাৎক্ষণিকভাবে খুব সহজেই ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন। এরপর গ্রাহককে তার ব্যাংক হিসাবের চেক বই, ডেবিট কার্ড এবং প্রমাণস্বরূপ প্রয়োজনীয় তথ্যাদি প্রদানের তারিখ জানিয়ে দিবেন।

অনলাইনে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৪

সেলফিন এপ্লিকেশন ব্যবহার করে একাউন্ট তৈরি: গুগল প্লে-স্টোর থেকে ইসলামী ব্যাংকের সেলফিন (Cellfin) অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে অনলাইনে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম আছে। তবে, ব্যাংকিং সিকিউরিটি জোরদার করতে, চেক বই, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট রিলেটেড বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সেবা পেতে যে শাখা বা এজেন্ট ব্যাংকিং অফিসের অধীনে একাউন্ট চালু করবেন সেখানে ৩ মাসের মধ্যে উপস্থিত হওয়া গ্রাহকের জন্য অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ।

আশা করছি ইসলামী ব্যাংক অনলাইন একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে আপনার জানার ইচ্ছে রয়েছে। এই আর্টিকেলে যদি ইসলামী ব্যাংক অনলাইন একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত লিখতে চাই তাহলে অনেক আর্টিকেলের লেন্থ অনেক লম্বা হয়ে যাবে। তাই এখান থেকে দেখে নিন কিভাবে ইসলামী ব্যাংক অনলাইন একাউন্ট খুলতে হয়

ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার নিয়ম

ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার নিয়ম
ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম

বর্তমান সময়ে ইসলামী ব্যাংকের সেভিংস একাউন্ট এই ব্যাংকের গ্রাহকদের সবচেয়ে জনপ্রিয়। ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মুদারাবা পদ্ধতিতে সেভিংস অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারীদেরকে বিভিন্ন মেয়াদ নির্ধারিত মাসিক চাঁদার অর্থ জমা রাখার সুযোগ দেয়। এবং গ্রাহকদের জমা দেয়া টাকা ইসলামী ব্যাংক বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগে করে। সেই বিনিয়োগ করা মূলধন হতে যে লভ্যাংশ পাওয়া যায় তা থেকে ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্টের গ্রাহক দেরকে নিয়মিত একটি লভ্যাংশ দিয়ে থাকে।

বিনিয়োগ করা অর্থ থেকে প্রাপ্ত লোভ্যাংশের সর্বনিম্ন ৬৫% সেভিংস অ্যাকাউন্ট ধারীদের মধ্যে ওয়েটেজের ভিত্তিতে প্রদান করে থাকে। গ্রাহকের সেভিংস অ্যাকাউন্টে প্রতিমাসে স্বল্প পরিমাণ নির্ধারিত লভ্যাংশ জমা হলেও পরবর্তীতে বছর শেষে লভ্যাংশের বাকি টাকাও জমা হবে।

বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম অনুযায়ী স্থানীয় যেকোন শাখা বা এজেন্ট সার্ভিস কেন্দ্র অফিসে গিয়ে ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খুলতে পারবেন।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট কারেন্ট ব্যাংক একাউন্টের মতো হলেও সেভিংস একাউন্টে মাসিক লেনদেনের নির্দিষ্ট সীমা রয়েছে। তবে ইসলামী ব্যাংক সঞ্চয়ী সেভিংস একাউন্টে পরিপূর্ণ লভ্যাংশ পেতে হলে নির্দিষ্ট মেয়েদের পূর্বে সঞ্চয় সেভেন সেভেন একাউন্টের অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন না। একাউন্টের নির্দিষ্ট মেয়েদের পূর্বে যদি বিশেষ কারণে ডিপোজিট ভেঙ্গে অর্থ উত্তোলন করেন তাহলে লভ্যাংশ পাবেন না। 

ইসলামী ব্যাংক সেভিংস অ্যাকাউন্ট এর প্রকারভেদ

সাধারণত ইসলামী ব্যাংকে গ্রাহকরা তাদের অর্থ জমা রেখে লভ্যাংশ পাওয়ার জন্যই “ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট” চালু করেন। আর এজন্য সকলের কাছে ইসলামী ব্যাংকের অন্যান্য অ্যাকাউন্টের তুলনায় ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্টের চাহিদা এবং গুরুত্ব অনেক বেশি। তবে ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্টের প্রকারভেদ সম্পর্কে অনেকেই জানতে চেয়েছেন। ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট এর প্রকারভেদ গুলো নিচে তুলে ধরা হলো: 

ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট মূলত তিন প্রকার যথা;

  1. ব্যক্তিগত সেভিংস একাউন্ট
  2. সঞ্চয়ী সেভিংস একাউন্ট
  3. ব্যবসায়িক সেভিংস একাউন্ট। 

ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খুলতে যা যা প্রয়োজন

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম অনুসারে সেভিংস একাউন্ট খুলতে কিছু ডকুমেন্টস লাগে। যেমন-

  • সেভিংস একাউন্টের আবেদন ফরম সংগ্রহ করে তা সঠিকভাবে পূরণ।
  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম নিবন্ধন সনদ/পাসপোর্ট/চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট/ড্রাইভিং লাইসেন্স এর এক কপি। 
  • আবেদনকারী প্রাপ্তবয়স্ক না হলে জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপির সাথে অভিভাবকদের জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিতে হয়।
  • আবেদনকারীর সদ্য তোলা ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবি।
  • আবেদনকারীরর দ্বারা নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম নিবন্ধন সনদের কপি ও ছবি সত্যায়িত করে জামা দিতে হবে।
  • ইউটিলিটি বিলের কপি (বিদ্যুৎ/পানি/গ্যাস/ইন্টারনেট বিল) ইত্যাদি।
  • আবেদনকারীর স্বাক্ষর ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট।
  • সেভিংস একাউন্ট সক্রিয় করতে প্রাথমিক ৫০০ টাকা ডিপোজিট করতে হবে।

ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার নিয়ম অনুযায়ী ডকুমেন্টস জমা দেওয়ার পর উক্ত ব্রাঞ্চের দায়িত্বরত কর্মকর্তা আপনার সেভিংস একাউন্ট আবেদন ফরমের বাকি অংশ (যা ব্যাংক কর্তৃপক্ষের হাতে থাকে) পূরণ করবেন। একাধিক জায়গায় আপনার স্বাক্ষর দেওয়ার দরকার হবে।

আবেদন ফরমের টার্মস এন্ড কন্ডিশন গুলো পড়ে নিয়ে সেই জায়গাগুলোতে আপনার স্বাক্ষর দিবেন। এরপর আপনার আঙুলের ছাপ বা ফিঙ্গার প্রিন্ট নেওয়া হবে। সর্বোপরি আপনাকে আপনার সেভিংস একাউন্ট সক্ষম করতে কমপক্ষে ৫০০ টাকা ডিপোজিট করতে হবে।

প্রাতিষ্ঠানিক সেভিংস একাউন্টের জন্য যে সকল ডকুমেন্টস প্রয়োজন

যেকোনো প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন প্রয়োজন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের নামে ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার প্রয়োজন হয়। তবে ব্যক্তি কেন্দ্রিক সেভিংস একাউন্ট এর তুলনায় প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক সেভিংস একাউন্ট করার ক্ষেত্রে কিছু বাড়তি ডকুমেন্টস বা তথ্যাদির প্রয়োজন হবে।

প্রাতিষ্ঠানিক সেভিংস অ্যাকাউন্টের জন্য যে সকল ডকুমেন্টস বা নথিপত্রের প্রয়োজন তা নিচে তুলে ধরা হলো:

  1. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার প্রয়োজন হলে ম্যানেজিং কমিটি দ্বারা রেজুলেশন থাকা আবশ্যক।
  2. যিনি উক্ত একাউন্টের হিসাব পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন তার সদ্য তোলা ২ কপি পাসপোর্সট সাইজের সত্যায়িত করা রঙিন ছবি।
  3. হিসাব পরিচালনাকারীর জাতীয় পরিচয় পত্র/পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফটোকপি।
  4. কোম্পানির জন্য ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে মেমোরেন্ডাম আর্টিকেল অব এসোসিয়েশন দ্বারা সত্যায়িত অনুলিপি জমা দিতে হবে।

ইসলামী ব্যাংক কারেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

মূলত ব্যবসায়ীদের জন্য ইসলামী ব্যাংক কারেন্ট একাউন্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং অধিক ব্যবহারযোগ্য। সাধারনত ইসলামিক কারেন্ট একাউন্ট ব্যবসায়ীদের জন্য প্রযোজ্য। ইসলামী ব্যাংক কারেন্ট একাউন্ট এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীগণ প্রতিদিন অর্থনৈতিক লেনদেন করেন।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: কারেন্ট একাউন্টের এই ধরনের চলমান হিসাবের জন্য ব্যাংক কর্তৃক গ্রাহককে কোন ধরনের মুনাফা কিংবা লাভ প্রদান করা হয় না।

ইসলামী ব্যাংক কারেন্ট একাউন্ট দিয়ে ব্যবসায়ীরা মূলত প্রতিদিন আনলিমিটেড অর্থ লেনদেন করার অধিকার রাখেন। ইসলামী ব্যাংক কারেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম অনুযায়ী গ্রাহককে অবশ্যই নিকটস্থ ইসলামী ব্যাংকের যেকোনো একটি শাখায় কিংবা এজেন্ট ব্যাংকিং সার্ভিসের যেকোনো শাখায় যেতে হবে।

ইসলামী ব্যাংক কারেন্ট একাউন্ট তৈরি করার জন্য যে সকল ডকুমেন্টস অথবা তথ্যের প্রয়োজন হবে তা নিচে তুলে ধরা হলো:

  1. আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রে/পাসপোর্টের/ড্রাইভিং লাইসেন্সের যেকোনো একটি ফটোকপি।
  2. আবেদনকারীর সত্যায়িত করা সদ্য তোলা ২ কপি পাসপোর্সট সাইজের রঙিন ছবি।
  3. আবেদনকারী দ্বারা নির্বাচিত নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
  4. নমিনির ১ কপি পাসপোর্সট সাইজের রঙিন ছবি।
  5. আবেদনকারীর রেগুলার ট্রেড লাইসেন্স এর ফটোকপি
  6. ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জায়গা ভাড়া হলে তার চুক্তিনামা অথবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জায়গা নিজের হলে যে কোন ইউটিলিটি (বিদ্যুৎ/পানি/গ্যাস/ইন্টারনেট) ইত্যাদি বিলের কপি
  7. ইসলামী ব্যাংকের যে কোন একজন কারেন্ট একাউন্ট ধারীর স্বাক্ষর যার দ্বারা আবেদনকারীর ছবিও সত্যায়িত করতে হয়।
  8. আবেদনকারীর স্বাক্ষর এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট।
  9. চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট।
  10. প্রাথমিক পর্যায়ে ১ হাজার টাকা ইনস্ট্যান্ট ডিপোজিট করতে হবে।

এছাড়াও ইসলামী ব্যাংক কর্মচারী, কর্মকর্তা আবেদনকারীর সকল তথ্য যাচাইয়ের স্বার্থে অন্যান্য ডকুমেন্টস বা তথ্য দেখতে চাইতে পারে।

বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রয়োজনে সেভিংস একাউন্ট তৈরি করতে উপরে উল্লেখিত ডকুমেন্টস গুলো প্রতিষ্ঠানভেদে ভিন্ন হতে পারে। যেমন;

  • ব্যক্তিগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হলে টি-আই-এন সার্টিফিকেট (TIN Certificate) “টিন সার্টিফিকেট” প্রয়োজন হতে পারে।
  • ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠান হলে ট্রাস্টের দলিল+খারিজ+খতিয়ান বা প্রমানপত্র প্রয়োজন হবে।
  • মসজিদ-মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় হলে ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশন এর দরকার হবে।
  • আবেদনকারীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি লিমিটেড কোম্পানি হলে মেমোরেন্ডাম এন্ড আর্টিকেলস অব অ্যাসোসিয়েশন (Memorandum and Articles of Association) এর সত্যায়িত কপি প্রয়োজন হবে।

ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্টের সুবিধা

ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট এর অনেকগুলো সুবিধা রয়েছে। যে সকল সুবিধার জন্য সাধারণ জনগণ এবং সর্বস্তরের মানুষ ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট তৈরি করে, সে সকল সুবিধা নিচে তুলে ধরা হলো :

  • নির্দিষ্ট মেয়াদ জমাকৃত অর্থের উপর সেভিংস একাউন্ট থেকে সর্বনিম্ন ৬৫% হারে লভ্যাংশ পাওয়া যায়।
  • একাউন্টের ধরন এবং মেয়েদের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন পরিমাণ অর্থ জমা দেওয়া যায়।
  • সেলফিন অ্যাপ্লিকেশন এর মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা পাওয়া যায়। 
  • ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খুলতে ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী প্রাথমিক পর্যায়ে শুধুমাত্র ৫০০ টাকা ডিপোজিট করতে হয়।

ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট ফরম

যেকোনো ব্যাংকে একাউন্ট তৈরি করে পড়বে অবশ্যই উক্ত ব্যাংকের আবেদন ফরম এর প্রয়োজন পড়ে। ঠিক একই ভাবে ইসলামী ব্যাংকের যেকোনো ধরনের একাউন্ট তৈরি করতে নির্দিষ্ট আবেদন ফরমের প্রয়োজন হয়। তাই এখান থেকে ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট ফরম ডাউনলোড করে আপনার ল্যাপটপ, কম্পিউটার কিংবা মোবাইল ডিভাইসে রেখে দিন। আপনি চাইলে এই ফর্মটি পরবর্তীতে প্রিন্ট করে ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট সহ অন্যান্য একাউন্ট আবেদনের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন।

ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে

ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে
ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম

ইসলামী ব্যাংক কারেন্ট একাউন্ট তৈরি করতে যা যা লাগে তা সম্পর্কে আর্টিকেলে এই অংশে বর্ণনা করেছি। ইসলামী ব্যাংক কারেন্ট একাউন্টের ক্ষেত্রে একাউন্ট খোলার নিয়ম অনুযায়ী কিছু ডকুমেন্টস বা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের প্রয়োজন হয়। ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে তা নিচে বর্ণনা করা হলো:

  • বাংলাদেশ নাগরিক হতে হবে।
  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র।
  • জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি,অথবা পাসপোর্ট, কিংবা ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি।
  • আবেদনকারীর সদ্য তোলা ২ (দুই) কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
  • আবেদনকারী দ্বারা নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদের (সত্যায়িত) কপি।
  • নমিনির এক কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
  • ইউটিলিটি বিলের কপি (বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ইন্টারনেট, ইত্যাদি)।
  • আবেদনকারীর স্বাক্ষর। 
  • আবেদনকারীর ফিঙ্গারপ্রিন্ট।
  • ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকলে ই-টিন সার্টিফিকেট এর কপি।
  • প্রাথমিক ব্যাংক ডিপোজিট সর্বনিম্ন ১,০০০ টাকা।
  • নির্ভুল সঠিক তথ্য দিয়ে আবেদন ফরম তথ্য পূরণ।

বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম অনুযায়ী আবেদনপত্রের সাথে উপরে উল্লেখিত ডকুমেন্টসগুলো জমা দিতে হবে।

ইসলামী ব্যাংক লাইভ চ্যাট | হেল্পলাইন নাম্বার

ইসলামী ব্যাংক লাইভ চ্যাট
ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম

ইসলামী ব্যাংক হেল্পলাইন নাম্বার

  • 16259 অথবা
  • 09611016259 

ইসলামী ব্যাংক টেলিফোন নাম্বার

  • 9563040
  • 9560099
  • 9567161
  • 9567162
  • 9569417

ইসলামী ব্যাংক Fax নাম্বার

  • 880- 2- 9564532
  • 880 -2- 9568634

এগুলো ছাড়াও ইসলামী ব্যাংকের আরো হেল্পলাইন সার্ভিস রয়েছে। উপরোক্ত ইসলামী ব্যাংকের হেল্পলাইন নাম্বার গুলোতে যোগাযোগ করতেন না পারলে তাদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য নিচে দেয়ার টেবিল অনুসরণ করুন।

GPO Box no233
Telephone(02) 9563040(Auto Hunting), 9560099, 9567161,9567162, 9569417
Telex642525 IBANK BJ 632403 IBANK BJ 671620 IBANK BJ
Fax880- 2- 9564532, 880 -2- 9568634
SWIFTIBBLBDDH
CableISLAMIBANK
E-Mailinfo@islamibankbd.com
Webhttp://www.islamibankbd.com

আশাকরি উপরে দেয়া ইসলামী ব্যাংক হেল্পলাইন নাম্বার, ইমেইল এড্রেস, এবং লাইভ চ্যাট এর মাধ্যম গুলো ব্যবহার করে খুব সহজেই ইসলামী ব্যাংক হেল্পলাইন সেন্টার এর সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন এবং ব্যাংক একাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য নেয়ার পাশাপাশি যেকোন সমস্যার সমাধান নিতে পারবেন।

শেষ কথা

আজকের এই আর্টিকেলে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম, ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট কত প্রকার ও কি কি, কারেন্ট একাউন্ট, সেভিংস অ্যাকাউন্ট, স্টুডেন্ট একাউন্ট এবং সুবিধা অসুবিধা, সহ ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করতে কত টাকা প্রয়োজন হয় এবং কি কি ডকুমেন্টস লাগে সে সকল বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে এবং ইসলামী ব্যাংক রিলেটেড সকল ধরনের প্রশ্নের উত্তর আজকের এই আর্টিকেলে পেয়ে গেছেন। যদি আমাকে দেয়ার অর্থ আপনার কাছে ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই এই ব্লগপোষ্ট আপনার সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টগুলোতে শেয়ার করতে পারেন যাতে করে অন্যরাও উপকৃত হতে পারে। 

পরবর্তী যেকোনো আপডেট পেতে আর্টিকেলের নিচে ইমেল সাবস্ক্রিপশন করে রাখতে পারেন যাতে করে নতুন কোন আপডেট তথ্য মুহূর্তেই আপনার মোবাইলে চলে যায়। এবং ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট এবং ইসলামী কারেন্ট ব্যাংক খোলার নিয়ম এবং উক্ত ব্যাংক রিলেটেড আরো কোন তথ্য জানার থাকলে অবশ্যই কমেন্ট সেকশনে আপনার প্রশ্ন করুন, আমি আপনার প্রশ্নের উত্তর ব্যাপার চেষ্টা করব অথবা আপনার প্রশ্ন যদি জটিল হয় তাহলে তা নিয়ে একটি নতুন আর্টিকেল প্রকাশ করব। সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।

FAQ

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে?

ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে

ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে?

ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট চার্জ কত?

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট চেক করার নিয়ম?

মোবাইলে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট চেক করার নিয়ম?

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার চেক করার নিয়ম?

bangladesh islami bank account check

ইসলামী ব্যাংক ব্যালেন্স চেক করার নিয়ম?

ইসলামী ব্যাংক ব্যালেন্স চেক sms এর মাধ্যমে করা যায়

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe now

Give us a call or fill in the form below and we will contact you. We endeavor to answer all inquiries within 24 hours on business days.