সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ফটোকার্ড আকারে দাবি প্রচার করা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, “ইলিয়াসকে উপদেষ্টা বানালে কেউ দালালি করার সুযোগ পেত না।”
উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে উপরোল্লিখিত পোস্টগুলোতে সম্মিলিতভাবে প্রায় ১ লক্ষ পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “ইলিয়াসকে উপদেষ্টা বানালে কেউ দালালি করার সুযোগ পেত না” শীর্ষক কোনো মন্তব্য সারজিস আলম করেননি। প্রকৃতপক্ষে, কোনোরকমের নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডে কোনো গণমাধ্যমের লোগো বা নামেরও উল্লেখ পাওয়া যায়নি। সাধারণত কোনো গণমাধ্যম কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করে থাকলে, প্রচারিত ফটোকার্ডে গণমাধ্যমটির নাম বা লোগোর সংযুক্তি থাকে৷ তবে, প্রচারিত উক্ত ফটোকার্ডটিতে এমন কোনো গণমাধ্যমের নাম বা লোগোর উল্লেখ পাওয়া যায়নি, যা থেকে বুঝা যায় যে আলোচিত ফটোকার্ডটি গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়নি।
পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে গণমাধ্যম বা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রেও কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।
সারজিস আলম তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে নিয়মতিভাবে নানা তথ্য, মতামত জানিয়ে থাকেন। তবে, সারজিস আলমের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করলেও আলোচিত দাবিটির সপক্ষে কোনো পোস্ট পাওয়া যায়নি।
নতুন উপদেষ্টা বিষয়ে সারজিস আলম গত ১৬ নভেম্বরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর নিয়োগের সমালোচনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘ফারুকী তার পুরো সময়ে ক্ষমতার কাছাকাছি থাকার জন্য যেভাবে তোষামদি করার দরকার তা করেছেন। ফারুকীরা কীভাবে উপদেষ্টা পরিষদে আসেন। এমন কঠিন সময়ে নীরব থাকা ও গা-বাঁচিয়ে চলা লোকজনকে আমরা উপদেষ্টা হিসেবে দেখতে চাই না।’ তবে, সেখানে ইলিয়াসকে উপদেষ্টা বানানোর বিষয়ে তাকে কিছু বলতে দেখা যায়নি।
এছাড়া, গত ২৬ ডিসেম্বরে এক ফেসবুক পোস্টে অন্তর্বর্তী সরকারের তিন তরুণ উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমকে বিপ্লবী ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে বলেছেন সারজিস আলম। তবে, উক্ত পোস্টেও ইলিয়াস হোসেনের কোনো উল্লেখ নেই।
সুতরাং, “ইলিয়াসকে উপদেষ্টা বানালে কেউ দালালি করার সুযোগ পেত না” শীর্ষক মন্তব্য সারজিস আলম করেছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।